কলকাতা: আন্দোলন করলেই কি চাকরি পাওয়া যায়? চাকরি কারও ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ ? ‘নিয়ম বহির্ভূত ভাবে’ এক শিক্ষিকার চাকরি পাওয়া নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিত বসু। মামলাকারী মহিলার দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন এবং অবস্থান বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন সরমা ঘোষ। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ সেই সময় আন্দোলনকারীদের কয়েক জনকে ডেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেখানে ছিলেন সরমাও। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালে তাঁকে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়।
অভিযুক্ত শিক্ষিকাও মেনে নেন, পার্থের কথায় তাঁর চাকরি হয়েছিল। এরপরই এজলাশে মন্তব্য করেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু চাকরি কারও ‘পৈতৃক সম্পত্তি’ ? সোমবার এমন মন্তব্যে তাঁর নিশানা ছিল রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। নিয়ম মেনে ওই শিক্ষিকা চাকরি পাননি বলে স্বীকার করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)-ও। এ কথা জানার পর বিচারপতি বসু জানান, কমিশনকে নির্দেশ দেন, নিজেদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে ওই শিক্ষিকার চাকরির সুপারিশ বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, এমন ঘটনা আরও ঘটেছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখতে হবে।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধাতালিকার ওয়েটিং লিস্টে ওপরের দিকে নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি হয়নি, অথচ নীচে নাম থাকা অন্য মহিলা চাকরি পেয়েছেন এমন অভিযোগ তুলে হাই কোর্টে মামলা করেন প্রিয়ঙ্কা দত্ত সমাদ্দার নামে এক মহিলা। তিনি অভিযোগ করে জানিয়েছিলেন, তালিকায় ৩৩ নম্বরে নাম ছিল। কিন্তু তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে তালিকায় ৫৩ নম্বরে থাকা সরমা ঘোষকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।
২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি সরমাকে সুপারিশপত্র দিয়েছিল এসএসসি। ওই বছর ২০ মার্চ তাঁকে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মামলকারী প্রিয়ঙ্কার দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন এবং অবস্থান বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন সরমা। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ সেই সময় আন্দোলনকারীদের কয়েক জনকে ডেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেখানে ছিলেন সরমাও। তার পরেই তিনি চাকরির সুপারিশপত্র পান। পরে সরমাকে হাই কোর্ট এই মামলায় যুক্ত করলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে নেন। সোমবার সরমা আদালতে আবার এ কথা জানানোর পর ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিচারপতি বসু।