কলকাতা: তিনি ছিলেন নিঃসন্তান দম্পতির আশা-ভরসা। তিনি হাসি ফুটিয়েছিলেন অজস্র মায়ের মুখে। সন্তানের অপেক্ষায় থাকা অনেক মায়ের কোলে তিনি তুলে দিতে পেরেছিলেন ফুটফুটে সন্তান। কৃত্রিম উপায়ে প্রজননে পথ দেখানো দেশের প্রখ্যাত চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর জীবনযুদ্ধ শেষ হল বাংলার নতুন বছরের প্রথম দিনটিতেই। শুক্রবার সল্টলেকের বেসরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাঁর। বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তাঁর মৃত্যুতে চিকিৎসক মহলে নেমেছে শোকের ছায়া।
বেশ কয়েকদিন আগে সেরিব্রাল অ্যাটাক হয় তাঁর। পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তারপর থেকে তার একের পর এক শারীরিক অসুস্থতা লেগেই ছিল। গত বছর মূত্রনালিতে সংক্রমণ ধরা পড়ে। জ্বরও আসে তাঁর। কোভিড পরীক্ষা করা হয়। তারপরই জানা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত। একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। করোনাকে হারিয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে বার্ধক্যজনিত রোগ ব্যাধি লেগেই ছিল।
কয়েকদিন আগে শারিরীক অসুস্থতা বাড়তে থাকে তাঁর। সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি করা হয় তাঁকে। সেখানেই শুক্রবার সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দেশজুড়ে আইভিএফ চিকিৎসা জগতে অতি পরিচিত নাম বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। কৃত্রিম উপায়ে প্রজনন অর্থাৎ টেস্ট টিউব বেবি নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক ছিলেন এই বর্ষীয়ান চিকিৎসক। চিকিৎসার জন্য ‘ইনস্টিটিউট অব রিপ্রোডাকটিভ মেডিসিন’ প্রতিষ্ঠান গড়েন বৈদ্যনাথবাবু। সময়টা ১৯৮৬ সাল। সে বছরই বাংলায় প্রথম তাঁর হাত ধরে টেস্ট টিউব বেবির জন্ম হয়। তাঁর তৈরি করা গবেষণাপত্র ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ’ আইসিএমআরের হাতে তুলে দেন চিকিৎসক বৈদ্যনাথ চক্রবর্তী। এদিন অজস্র মানুষকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন তিনি। বৈদ্যনাথ চক্রবর্তীর প্রয়াণে চিকিৎসক মহলে নেমেছে শোকের ছায়া।