রাজ্য উদ্যানপালন দপ্তরের উদ্যোগে মালদা থেকে এই প্রথম বিদেশে রপ্তানি হতে চলেছে লিচু। চলতি বছর নভেম্বর মাসে বিশ্বকাপ ফুটবলের আসর বসতে চলেছে মধ্য এশিয়ার দেশ কাতারে। আর সেই দেশে এই প্রথম লিচু রপ্তানির উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার। এর পাশাপাশি ইতালি এবং জার্মানি থেকে লিচু রপ্তানির বরাত এসেছে বলে জানিয়েছে উদ্যানপালন দপ্তর। প্রায় আট টন লিচু এবার বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা উদ্যানপালন দপ্তরের কর্তারা। জেলার লিচু বিদেশে রপ্তানি শুরু হলে এই জেলার অর্থনীতির মানচিত্রটাই বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন লিচু চাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা ।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদায় ১ হাজার ৫৬০ হেক্টর জমিতে লিচু চাষ হয়। কালিয়াচকের তিনটি ব্লকে লিচু চাষের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি । তবে এখন জেলার প্রায় প্রতিটি ব্লকেই কমবেশি লিচুর চাষ হচ্ছে । প্রতি বছর এই জেলায় লিচুর গড় উৎপাদন থাকে ১৫ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন।
জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক বলেন, এই প্রথম লিচুও বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তাতে সুফলও মিলেছে। ইতিমধ্যে কাতার, বাহারিনের মতো ভূমধ্যসাগরীয় কয়েকটি দেশ এবং ইতালি, জার্মানির মতো কয়েকটি ইউরোপিয়ান দেশ থেকে ৫-৬ মেট্রিক টন লিচুর বরাত এসেছে। আর ১৫ দিনের মধ্যে লিচু গাছ থেকে পাড়া শুরু হয়ে যাবে। এর মধ্যেই আমরা রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে বিদেশে লিচু রপ্তানির চেষ্টা চালাচ্ছি । আমাদের সঙ্গে জেলা প্রশাসন এবং কেন্দ্রীয় সংস্থা, সিআইএসএইচও এই কাজে সহযোগিতা করছে৷ বিদেশে রপ্তানির আগে বেশ কয়েকদিন ভালো রাখতে লিচুকে সালফার ফিউমিগেশন করা হবে । আমরা আশাবাদী, এই জেলার লিচু পরবর্তীতে আরও অনেক দেশে পা রাখবে।
কালিয়াচক এলাকার লিচু চাষিদের বক্তব্য, বিদেশে মালদার লিচুবাগান করতে পারলে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে অনেকটাই শক্তি বৃদ্ধি। চাষিদের লিচু উৎপাদনের ক্ষেত্রে আগ্রহ আরও বেশি করে বাড়বে।
মালদা মার্চেন্ট চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি জয়ন্ত কুণ্ডু বলেন, এবারে জেলার লিচু বিদেশে পাঠানোর বরাত মিলেছে । প্রায় ৭-৮ মেট্রিক টনের বরাত ইতিমধ্যেই চলে এসেছে। এই চাষের সঙ্গে ১৫-২০ হাজার চাষি জড়িত রয়েছেন। আমরা যদি প্রথমবার ঠিকমতো বিদেশে লিচু পাঠাতে পারি, তবে জেলার পাশাপাশি রাজ্যও অর্থনীতিতে লাভবান হবে৷