সংখ্যাগুরু আর সংখ্যালঘু তত্ত্বে ভিন্ন মেরুতে কাকা ভাইপো। অর্থাৎ, ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকি এবং নওশাদ সিদ্দিকি। সম্পর্কে তাঁরা কাকা-ভাইপো। তবে নানা ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, রাজনৈতিক মতাদর্শ আলাদা। নওশাদ সিদ্দিকির গ্রেপ্তারি থেকে শুরু করে তাঁর জামিন আর তারপরই সাগরদিঘি ফল এবং এই প্রেক্ষিতে ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা ত্বহা সিদ্দিকির মতামত এমন কিছু ঘটনাকে যদি পরপর সাজানো যায় তাহলে সামনে আসছে এক নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ। সাগরদিঘির নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরই ত্বহার পরামর্শ ছিল, বুঝে শুনে প্রার্থী দিতে হবে না হলে আগামী দিনে তৃণমূলের সাগরদিঘির মতো অবস্থা হবে গোটা বাংলায়। ত্বহার বক্তব্য, ‘যেখানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা বেশি, সেখানে সংখ্যালঘু প্রার্থী দেওয়া উচিত। আবার যেখানে হিন্দু বেশি সেখানে হিন্দু প্রার্থী দেওয়া উচিত।’ তবে আইএসএফ দলের বিধায়ক নওশাদের এই ব্যাপারে একেবারে এক ভিন্ন মেরুতে দাঁড়িয়ে।
নওশাদের বক্তব্য,’ সংখ্যালঘু এলাকাতে সংখ্যালঘু প্রার্থী দিলে, তাঁরা উপকৃত হবেন, বা সংখ্যাগুরু দিলে উপকৃত হবেন না, এই তত্ত্ব আমি মেনে নিতে পারছি না। ক্যাবিনেটে কতজন সংখ্যালঘু মন্ত্রী আছেন, তাঁদের মধ্য দিয়েই সংখ্যালঘুরা কতটা উপকৃত হচ্ছেন, তা বোঝা সম্ভব। আমি চাই এমন প্রার্থী, যাঁরা মানুষের কথা ভাববেন, সাংবিধানিক পন্থা মেনে তাঁরা চলবেন। চাকরি তাঁরা বিক্রি করবেন না। সরকারি কর্মচারীদের যাতে হকের প্রাপ্য বুঝিয়ে দেবেন।’
এই প্রসঙ্গে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, সংখ্যালঘু এলাকায় সংখ্যালঘু প্রার্থী দেওয়া কিংবা হিন্দু অধ্যুষিত এলাকায় হিন্দু প্রার্থী দেওয়ার রীতি বাম আমল থেকেই চলে আসছে। পালাবদলের পর সেই রীতিতে খুব একটা বদল আসেনি। তবে পরিসংখ্যান বলছে, সাগরদিঘি বিধানসভা এলাকায় কোনও আসনেই সংখ্যালঘু প্রার্থী জয়ী হয়নি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ফল দেখলে বোঝা যায় সংখ্যালঘু প্রার্থী মাফুজা খাতুনকে দাঁড় করিয়েও বিশেষ একটা সুবিধা করতে পারেনি বিজেপি। ফলে এটা স্পষ্ট যে তহ্বা সিদ্দিকি যে দাবি করছেন তা নিয়ে যথেষ্টই সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। আর তা স্পষ্ট বাংলার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অপর এক প্রতিনিধি নওশাদের বক্তব্যে, যিনি বাংলার প্রথমবার নির্বাচনে লড়ে যিনি ২৬,৩৭৬ ভোটে জয়ী হয়েছেন ভাঙড় বিধানসভা থেকে।