কলকাতা : মুখ, গলা থেকে স্তন, ফুসফুস ক্যানসারের প্রবণতা বেড়েই চলেছে। বিশেষত মহিলাদের ক্ষেত্রে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা শরীর জানান দেওয়ার আগেই তা ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক সময় সচেতনতার অভাবে রোগী প্রথমটাই কিছু বুঝতেই পারছেন না, যার জেরে বিপদ বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতেরাজ্যে ক্যানসার চিকিৎসার পরিকাঠামো নির্মাণে আরও একধাপ এগোল রাজারহাটের সিএনসিআই (চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট) । ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ক্যানসার দিবসে সিএনসিআই-এর লক্ষ্য প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা। আরও বেশি সংখ্যক প্রাণ বাঁচিয়ে রোগীদের সুস্থ জীবন দেওয়া। ভ্রাম্যমাণ ম্যামোগ্রাফি ইউনিট চালু করল চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট, যা নিঃসন্দেহে যা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেবে ক্যানসার আক্রান্তদের ক্ষেত্রে। গ্রামের মানুষকে আর কষ্ট করে শহরের হাসপাতালে আসতে হবে না।
এই ইউনিটের সাহায্যে কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসকরাই পৌঁছে যাবেন রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকায়। এক ধরনের বিশেষ বাসের মধ্যে হবে স্তন ক্যানসার নির্ণয়। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে বিশ্বের ২৩ লক্ষ মহিলা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার মহিলা।
ক্যান্সারের সংখ্যাতত্ত্ববিদ শ্যামসুন্দর মণ্ডলের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, ২০২০ সালে বাংলায় নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন ৮০, ৬৬৩ জন। এর মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত ৭৯৫১ জন। যা রাজ্যের মোট ক্যানসারের ১৮.৪ শতাংশ।
কীভাবে কাজ করবে এই ম্যামোগ্রাফি মেশিন? সিএনসিআইয়ের ডেপুটি ডিরেক্টর সুপর্ণা মজুমদার বলেন, ‘ম্যামোগ্রাফি মেশিন মূলত একটি এক্সরে মেশিন। যা দিয়ে আমরা স্তনের পরীক্ষা করি। কোনও অস্বাভাবিকতা থাকলে তা ধরা পড়বে। এই রোগের ক্ষেত্রে যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়বে, তত ভালো চিকিৎসা হবে।’ সিএনসিআইয়ের মেডিক্যাল ডিরেক্টর শঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইন্সটিটিউট ভারতের প্রাচীনতম প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালে নিউটাউনে আমরা নতুন ক্যাম্পাস পাই। ৪৬০ বেডের ব্যবস্থা আছে এখানে। মানুষের কাছে পৌঁছতে আমরা নানা সময় নানা কার্যক্রম নিয়েছি। মানুষের দুয়ারে পৌঁছনোর চেষ্টা করছি এবার। বিভিন্ন টেস্ট, স্ক্রিনিং প্রোগ্রাম, প্রিভেনটিভ প্রোগ্রাম নিয়ে আমরা মানুষের কাছে পৌঁছে যাই। এবার এমএমইউ ভ্যান গ্রামে গ্রামে পৌঁছে যাবে।’