ফাইনালে এসেও ভারতের হাতছাড়া বিশ্বকাপ

বিশ্বকাপ ফাইনালে এসে অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিজয়রথ থামল ভারতের। টিম ইন্ডিয়ার করা ২৪০ রান খেলা ৭ ওভার বাকি থাকতেই মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। দলের ২৩৯ রানের মাথায় ট্র্যাভিস হেড ১৩৭ রানে আউট হলেও এদিনের ভারতে রানকে তাড়া করতে তিনিই মুখ্য ভূমিকা নেন।অন্যদিকে তাঁকে যোগ্য সঙ্গত দেন মারনুস ল্যাবুশেন। ল্যাবুশনের ব্যক্তিগত সংগ্রহ ৫৮ রান। এদিন জয়সূচক রান আসে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ব্যাট থেকেই।

ফাইনালে ভারতের স্কোরবোর্ডে ছিল ২৪০ রান। অস্ট্রিলায়র বিরুদ্ধে এই স্কোর ঠিক কতটা স্কোর সুরক্ষিত তা বলা কঠিন ছিল। অথচ এর আগে এই ভারতীয় দলই আগের ম্যাচে করেছিল ৩৯৭ রান। বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে দুরন্ত পারফর্ম করা সেই ভারতীয় দল ফাইনালে করল মাত্র ২৪০। এককথায় এদিন ভারতীয় ব্যাটিংয়ের ভরাডুবি।

রবিবার আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে যে পিচে ফাইনাল খেলা হল, এই পিচেই ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ হয়েছিল। তবে লিগের ম্যাচ এবং ফাইনালের মধ্যে পার্থক্য অনেক। পিচেও পার্থক্য থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করা হয়েছিল।তবে সেটা হয়নি। ফলে ফাইনালে এত মন্থর উইকেটে অস্বস্তিতে পড়েন ভারতীয় ব্যাটাররা। স্লো-পিচে স্কোরটা আপাত দৃষ্টিতে কম মনে হলেও তা হাল ছাড়ার মতো ছিল না। কারণ, এই বিশ্বকাপেই তো ভারতীয় দল তিন প্রতিপক্ষকে ৫৫, ৮৩ এবং ১২৯ রানে অলআউট করেছে। ফলে আশায় বুক বেঁধেছিলন ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীরা।

রবিবার ফাইনালে টস হতেই এর আগের দুটি বিশ্বজয়ের সঙ্গে তুলনা শুরু করেন ভারতীয় ক্রিকেট প্রেমীরা। ১৯৮৩ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। ফাইনালে টস হেরেছিলেন কপিল দেব। তেমনই ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালে টস হেরেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। দু-বারই ফল ভারতের পক্ষেই গিয়েছিল। তেমনই আমেদাবাদে টস জিতে প্যাট কামিন্স ফিল্ডিং নিতেই অনেকেই বলেছিলেন, সৌরভের ভুলটাই যেন করলেন প্যাট কামিন্স। ২০০৩ বিশ্বকাপে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। বড় টার্গেট দিয়ে ভারতকে হারিয়েছিল অজিরা। কুড়ি বছর পর ফের বিশ্বকাপ ফাইনালে মুখোমুখি ভারত-অস্ট্রেলিয়া। এদিন শুরুটা যেমন হয়, তেমনই করেছিল ভারত। তবে প্রথমেই শভমন আউট হতেই এক ধাক্কা খায় ভারত। মন্থর পিচে শট খেলা সহজ নয়। শুভমন গিল সেটা করতে গিয়েই ম্যাক্সওয়েলের বলে ক্যাচ দেন ট্রাভিস হেডকে। কভার থেকে পিছন দিকে ১১ মিটার দৌড়ে অনবদ্য ক্যাচ নেন ট্র্যাভিস। এদিকে রোহিত শর্মার স্ট্র্যাটেজি ছিল স্পষ্ট। পাওয়ার প্লে থেকে যতটা সম্ভব রান তোলা যাত দল একটা মোমেন্টাম পায়।আর তিনি আউট হলেও যেন বিরাট, কে এল রাহুলরা সেই মঞ্চে বড় রান করার পরিস্থিতি তৈরি করতে পারেন। এদিনও সেটাই করার চেষ্টা করতে গিয়ে ৪৭ রানে আউট হন। এরপর লোকেশ রাহুল-বিরাট কোহলি জুটি ইনিংস মেরামতির চেষ্টা করে। তবে এদিন বিরাটের আউট খুবই দুর্ভাগ্যজনক। ব্যক্তিগত ৫৪ রানের মাথায় প্যাট কামিন্সের বল ট্যাপ করেছিলেন বিরাট কোহলি। প্লেড অন হন। বিরাট ফিরতে সেই দায়িত্ব পড়ে রাহুলের কাঁধে। তবে রিভার্স সুইংয়ে সমস্যয় পড়েন রাহুল, জাডেজারা। এদিকে ৬৬ রানে ফেরেন লোকেশ রাহুল। স্লগ ওভারে সূর্যকুমার যাদবের ওপর প্রত্যাশা ছিল। যদিও তাঁকে এদিন স্লোয়ার দেন অজি বোলাররা। এদিকে সূর্যর পছন্দ পেস। ফলে অস্বস্তিতে পড়েন সূর্য। ৪৮তম ওভারে সূর্য আউট হতেই অনেকেই আশহ্কা করছিলেন আদৌ ৫০ ওভার ব্যাট ভারত করতে পারবে কি না। ঠিক ৫০ ওভারের মাথাতেই পড়ে শেষ উইকেট। স্কোরবোর্ডে তখন ২৪০ রান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − eleven =