উচ্চ মাধ্যমিকে শূন্য পেয়েও প্রাথমিকের শিক্ষক, পর্ষদের তরফ থেকে কাট অফ মার্কস প্রকাশের পরই সামনে এল তথ্য

পাঁচ বছর ধরে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা করছেন, আর তাঁর উচ্চমাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর শূন্য। মাধ্যমিক কিংবা উচ্চমাধ্যমিক, কোনও পরীক্ষাতেই উত্তীর্ণ হতে পারেননি। তবুও প্রাথমিকে শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। সম্প্রতি শিক্ষক নিয়োগে জেলা ভিত্তিক কাট অফ মার্কস প্রকাশ পেয়েছে, তাতেই সামনে এসেছে উত্তর দিনাজপুরের এক শিক্ষকের এমন ঘটনার কথা। প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিত্‍ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে মঙ্গলবার ২০১৬ সালের প্রাথমিকে নিয়োগের ক্ষেত্রে জেলা ভিত্তিক কাট অফ মার্কস প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। তাতেই সামনে আসে এই ঘটনা। শুধু তাই নয়, পর্ষদের প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করেও প্রাথমিকে চাকরি করছে, এমন বহু প্রার্থী রয়েছেন। বহু প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চাকরি প্রাপকের উচ্চমাধ্যমিকের নম্বর শূন্য। আবার অনেকেই এমন রয়েছেন, যাঁরা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক দশ শতাংশেরও কম নম্বর পেয়েও চাকরি পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, উত্তর দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় এমন প্রার্থীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। আর এখানেই প্রশ্ন উঠে গেল তাহলে কীভাবে টেট দিলেন তা নিয়েই। যদিও উত্তর দিনাজপুরের এই শিক্ষকের দাবি, ভুল আসলে পর্ষদেরই। জেলা পরিদর্শকের অফিসে নিজের সার্টিফিকেট নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ওই শিক্ষক। আর এখানেই প্রশ্ন বিরোধী শিবিরের, পর্ষদ আর কত ভুল করেছে তা নিয়ে। এদিকে পর্ষদের দাবি, ভুল করেছে এজেন্সি।
প্রসঙ্গত, উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের ডালিমগাঁ-র দেওগা অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে কর্মরত বরুণ চন্দ্র রায়। তিনি ২০১৭ সালে করনদিঘি ব্লকের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পান। এরপর কালিয়াগঞ্জের দেওগা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে যান তিনি। গত মঙ্গলবার হাইকোর্টের নির্দেশে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ যে তালিকা প্রকাশ করে, সেখানে ওই শিক্ষকের নামের পাশে দেখা যাচ্ছে, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় তাঁর প্রাপ্ত নম্বর শূন্য। এরপরই বুধবার সন্ধ্যায় ওই শিক্ষক সব নথিপত্র নিয়ে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কাছে যান। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, ডিএলএড ট্রেনিং সহ যাবতীয় মার্কশিট ও সার্টিফিকেট নিয়ে হাজির হন। সব নথি খতিয়ে দেখার পর হতবাক জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক দুলাল সরকারও। তিনি বলেন, ‘কাগজপত্র দেখলাম। কোথাও কোনও অসুবিধা নেই। বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। আপাতত কিছু করার নেই।’ তাঁর দাবি, তিনি বিষয়টি পর্ষদকে ফোনে জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, যে এজেন্সি তালিকা তৈরির দায়িত্বে ছিল, তাদের কাছে জবাব চেয়েছে পর্ষদ। এই ভুল মানিক ভট্টাচার্যের আমলের বলেই দাবি পর্ষদের। আর সে সব পুরনো কাগজ আর ঘাঁটতে রাজি নয় পর্ষদ। এই ইস্যুতেই প্রশ্নই তুলেছেন বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। যে তালিকা প্রকাশ হয়েছে, তাতেও অনেক গরমিল আছে বলেও দাবি করেন আইনজীবী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − four =