নিজস্ব প্রতিবেদন, কাঁকসা: কাঁকসায় আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবিতে শনিবার দুপুর সাড়ে তিনটে থেকে কাঁকসা থানার সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে বসেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষরা ও পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী অধিকার মঞ্চ এবং পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী ও লোকশিল্পী সংঘের সদস্যরা।
আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে এদিন কাঁকসা থানার সামনে অবস্থান বিক্ষোভের পাশাপাশি কাঁকসা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসির কাছে দোষীদের শাস্তির দাবিতে ডেপুটেশন জমা দেন আদিবাসী সংগঠনের সদস্যরা। এদিন ডেপুটেশন দেওয়ার পাশাপাশি আদিবাসী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। আদিবাসী সংগঠনের মহিলাদের ওপর বা কাঁকসা ব্লকের কোথাও কোনও মহিলার ওপর নির্যাতন হলে বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটলে প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয় তবে আগামী দিনে তাঁরা দোষীরা কোন সম্প্রদায়ের তা বিবেচনা করে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নেবেন এবং দোষীদের শাস্তি দেবেন।
তাঁদের দাবি, আদিবাসী মহিলাদের জঙ্গলে কাঠ কুড়তে যেতে হয়। এই ধরনের ঘটনা যদি ঘটতে থাকে, তা হলে আগামী দিনে তাঁরা কী ভাবে জঙ্গলে যাবে। আগামী দিনে যাতে আদিবাসী সম্প্রদায়ের মহিলাদের ওপর কোনও রকম অত্যাচার না হয় তাই প্রশাসনের কাছে আবেদন জানিয়েছেন আদিবাসী সংগঠনের সদস্যরা। একই সঙ্গে যে সমস্ত জায়গায় মদ গাঁজার আসর বসে সেখানে যাতে হানা দিয়ে পুলিশ তাদের ধরে শাস্তি দেয় সেই বিষয়েও কাঁকসা থানার আইসির কাছে আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা। কাঁকসা থানার ভারপ্রাপ্ত আইসি তাঁদের আবেদন শুনে এলাকায় নজরদারি বাড়াবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত পাঁচ তারিখ কাঁকসার মলানদিঘি এলাকার জঙ্গলে এক আদিবাসী নাবালিকা তার বান্ধবীকে নিয়ে জঙ্গলে কাঠ কুড়তে যায়। জঙ্গল থেকে কাঠ নিয়ে ফেরার পথে এক নাবালক সহ চারজন তাকে জঙ্গলের ভেতর তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। আদিবাসী নাবালিকার বান্ধবী ছুটে পালিয়ে গিয়ে নাবালিকার বাবাকে গোটা ঘটনা জানালে সন্ধ্যা নাগাদ জঙ্গলে তল্লাশি চালিয়ে গুরুতর অসুস্থ ও নগ্ন অবস্থায় তাঁর মেয়েকে উদ্ধার করে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানেনির্যাতিতা নাবালিকা দুর্গাপুর মহাকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নির্যাতিতার বাবা কাঁকসা থানায় লিখিত অভিযোগ জানালে, ঘটনার দিন রাতে কাঁকসা থানার পুলিশ এক নাবালক সহ মোট চারজনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার মহকুমা আদালতে তিন যুবককে এবং নাবালককে আসানসোল জেলা আদালতে পেশ করে। ধৃত নাবালককে আসানসোল আদালতের বিচারক হোমে পাঠান এবং ধৃত তিনজনকে দুর্গাপুর মহকুমা আদালতের বিচারক তিনদিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র নিন্দা ঝড় ওঠে বিভিন্ন মহলে।