গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত অনুব্রত মণ্ডলকে ১১ দিনের ইডি হেপাজতের নির্দেশ দিল দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। শুক্রবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে এমনই নির্দেশ দেয় দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট। শুধু তাই নয়, এদিনই অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডলকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। অনুব্রত মণ্ডলের দেওয়া সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে এবার তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জেরার কথা ভাবছে ইডি বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত, শুধু অনুব্রত কন্যাই নয়, তৃণমূল নেতার বিপুল সম্পত্তির উৎস সন্ধানে তাঁর ব্যক্তিগত হিসাবরক্ষক মণীশ কোঠারি-সহ আনুমানিক ১১ জনকে এদিন তলব করা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। প্রসঙ্গত , গত সাত তারিখ রাতে বীরভূমের দাপুটে নেতাকে দিল্লি নিয়ে যায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট।
এদিকে ইডি সূত্রে খবর, গত ৪৮ ঘণ্টা ইডি হেডকোয়ার্টারে ম্যারাথন জেরা মুখে অনুব্রত মণ্ডল। সূত্রের খবর, জেরায় তৃণমূল নেতার থেকে জানা গিয়েছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। যদিও ইডি আধিকারিকদের অভিযোগ, একাধিক তথ্য গোপন করে যাচ্ছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা। শুধু তাই নয়, অনুব্রত মণ্ডলের দেওয়া সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখতে এবার তাঁর মেয়ে সুকন্যা মণ্ডলের মুখোমুখি বসিয়ে জেরার কথা ভাবছে ইডি বলে সূত্রের খবর। আর সেই কারণেই অনুব্রত কন্যা সুকন্যা মণ্ডল হ আরও ১১ জনকে দিল্লিতে তলব করা হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। কারণ, ইডি-র আধিকারিকদের ধারনা, এরা প্রত্যেকেই কোনও না কোনও ভাবে অনুব্রতর আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত।
এদিকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্ট সূত্রে খবর, ২ দিনের হেফাজত শেষে এদিন সকালেই দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে অনুব্রত মণ্ডলকে পেশ করে ইডি। এদিন আদালতে ইডি-র তরফ থেকে দাবি করা হয়, অভিযুক্তের অ্যাকাউন্টে বিপুল অঙ্কের টাকা গিয়েছে। শুধু তাই নয়, পাশাপাশি এও দাবি করা হয় যে, তদন্তে বাংলাদেশ লিঙ্ক উঠে এসেছে। তাদের দাবি, পিএমএলএ আইন নথির ওপর নির্ভর করে। সেই নথি নষ্ট হয়ে থাকতে পারে, পোড়ানো হতে পারে, অন্য দেশে পাঠানো হতে পারে। এই মামলার অনেক অভিযুক্ত বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়েছে বলে ধারনা ইডি-র আধিকারিকদের। এমনকী মামলার সঙ্গে যুক্ত নথিও দেশের বাইরে গিয়ে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করে ইডি। তাই আরও গভীরে তদন্তের জন্য ১১ দিন হেপাজতে নেওয়ার আর্জি জানায় তদন্তকারী সংস্থা।
এদিকে এদিন অনুব্রতর তরফে জামিনের আর্জি না জানানো হলেও, তাঁর আইনজীবী উল্লেখ করেন অত্যন্ত ধীরগতিতে জেরা করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অনুব্রতর আইনজীবীরা এও জানান, তাঁদের মক্কেলের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ দেওয়া হলেও, সেখানে রাখা হচ্ছে সিসিটিভি। এ কথা শুনে বিচারক তদন্তকারী অফিসারদের কাছে জানতে চান, এরকমটা হচ্ছে কি না। ইডি জানায়, এ বিষয়টা নিশ্চয় দেখা হবে। প্রসঙ্গত, এর আগের শুনানিতে বিচারক নির্দেশ দিয়েছিলেন, হেফাজতে থাকাকালীন প্রতিদিন অনুব্রতর সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁর আইনজীবীরা। এছাড়া জেরার সময়ও উপস্থিত থাকতে পারবেন তাঁরা। সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অনুব্রতর কিছু বলার আছে কি না তাও জানতে চান বিচারক রঘুবীর সিং। কিন্তু অনুব্রত তাঁর দোভাষীর মাধ্যমে জানান তাঁর কিছু বলার নেই। শুনানি শেষে ইডি-র আর্জি মেনে ১১ দিনের হেপাজতের নির্দেশ দেয় আদালত।