জেনে বুঝেই এই ঘটনা, কানঝাওয়ালা কাণ্ডে এমনটাই স্বীকারোক্তি ধৃতদের

দিল্লি কানঝাওয়ালা কাণ্ডে  অবশেষে দোষীরা স্বীকার করে নিল তাদের দোষ। এদিন তাদের স্বীকারোক্তিতে যে ঘটনা সামনে উঠে এসেছে তার থেকে স্পষ্ট যে ঠাণ্ডা মাথায় দুর্ঘটনার পর অঞ্জলিকে ১২ কিলোমিটার রাস্তা গাড়ির চাকায় টেনে নিয়ে যায় তারা। একইসঙ্গে তারা এও জানিয়েছে কোনও নেশার ঘোরে সে রাতে দিল্লির কানঝাওয়ালা রোড দিয়ে গাড়ি ছোটায়নি। বরং সবটাই ছিল পরিকল্পিত। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়িতে বসা অভিযুক্তরা স্বীকার করেছেন যে অঞ্জলির স্কুটির সঙ্গে তাদের গাড়ির ধাক্কা লাগে। দুর্ঘটনার কয়েক মুহূর্ত পরেই তাঁর বুঝতে পেরেছিলে স্কুটিতে থাকা মেয়টির শরীর আটকে গিয়েছে তাঁদের গাড়িতে। তবে সব জেনেও অঞ্জলিকে উদ্ধারের কোনও চেষ্টা করেনি তাঁরা। বরং দ্রুতগতিতে একের পর এক ইউটার্ন নিয়ে গাড়ি ছুটিয়েছে। শেষপর্যন্ত অঞ্জলির দেহ গাড়ি থেকে রাস্তা পড়ে গেলে এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় তাঁরা। কানঝাওয়ালার এই ঘটনার বীভৎসতায় চমকে উঠেছিলেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। তবে এদিন ধৃতদের স্বীকারোক্তিতে যে ঘটনা সামনে এল তা নৃশংস।

দুর্ঘটনার পর কেন অঞ্জলিকে গাড়ির তলা থেকে টেনে বের করতে এগিয়ে এল না গাড়িতে থাকা যুবকরা এই প্রশ্নের উত্তরে তারা জানিয়েছে, ঘটনার রাতে গাড়িতে জোরে গান বাজছিল বলে প্রথমে কিছুই বুঝতে পারেনি তাঁরা। তবে, ধৃতদের বয়ানে শেষ পর্যন্ত এটা স্পষ্ট যে পয়লা জানুয়ারি ভোররাতে জেনে বুঝেই সবটা করে তারা। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতরা জানিয়েছে, সমস্যায় জড়িয়ে পড়ার ভয়ে অঞ্জলিকে সাহায্য করতে তাদের কেউ গাড়ি থেকে নামেনি। কারণ, তাদের আশঙ্কা ছিল গাড়ি থেকে নেমে অঞ্জলিকে বের করে আনতে গেলে খুনের মামলায় ফেঁসে যেতে পারে তারা। এরপরেই নিজেদের বাঁচাতে পরবর্তী পরিকল্পনা করে ফেলে অভিযুক্তরা।

একইসঙ্গে তারা এও সিদ্ধান্ত নেয় যে, কিছুক্ষণ গাড়ি চললে অঞ্জলির দেহ আপনা থেকেই রাস্তায় পড়ে যাবে। সেই অপেক্ষাতেই কানঝাওয়ালার রাস্তায় একের পর এক ইউ-টার্ন নিয়ে ঘুরছিল গাড়ি। পরিকল্পনা মাফিকই শেষ পর্যন্ত গাড়ি থেকে রাস্তায় পড়ে যায় অঞ্জলির দেহ। এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয় অভিযুক্তরা। এই ঘটনায় যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয় তার মধ্যে ধৃত দীপক খান্না পুলিশকে জানায়, সেই গাড়ি চালাচ্ছিল। তবে, পুলিশি তদন্তে উঠে আসে দীপক সে রাতে গাড়িতে ছিলই না। গাড়ি চালাচ্ছিল দীপকের তুতো ভাই অমিত। লাইসেন্স ছাড়াই স্টিয়ারিংয়ে বসেছিল সে। এদিকে দিল্লি কাণ্ডের তদন্তে নেমে ধৃত মোট সাতজনের মধ্যে অঙ্কুশ খান্নাকে জামিন দিয়েছে দিল্লির রোহিনী আদালত। ২০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত জামিনে ছাড়া পায় অঙ্কুশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 10 =