বুধবারই, দিল্লি শহরের রাস্তায় বইতে শুরু করেছিল যমুনার জল। বন্যার জল পৌঁছে গিয়েছিল রিং রোড পর্যন্ত। বৃহস্পতিবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বাসভবন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে পৌঁছে গেল বন্যা। যমুনা নদী ফুলে ফেঁপে উঠে পৌঁছে গিয়েছে দিল্লির সিভিল লাইনস আবাসিক এলাকার মাত্র ৩৫০ মিটারের মধ্যে। এই সিভিল লাইনস এলাকাতেই থাকেন কেজরিওয়াল এবং অন্যান্য শীর্ষ সরকারী কর্মকর্তারা। এর থেকেই রাজধানীর করুণ চিত্রটা স্পষ্ট হয় উঠেছে। পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে স্বাভাবিক জনজীবন।
২ কোটি জনসংখ্যার শহরে নীচু এলাকার শয়ে শয়ে বাসিন্দা এখন ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। কেজরিওয়াল জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই, বন্যাকবলিত এলাকাগুলি থেকে সকল বাসিন্দাদের নিরাপদ এলাকায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানুষের প্রাণ বাঁচানোই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। এই জরুরি পরিস্থিতিতে আমি দিল্লির সকল মানুষকে সম্ভাব্য সকল উপায়ে একে অপরকে সহযোগিতা করার আবেদন করছি।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, ত্রাণ শিবিরগুলিতে শৌচাগার এবং স্নানের জায়গার সমস্যা ছিল। তাই, শিবিরগুলি বিভিন্ন স্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে যমুনার জল ছাপিয়ে গিয়েছে ২০৮ মিটারের মাত্রাও। ফলে, রবিবার পর্যন্ত স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, কম গুরুত্বের সরকারি অফিসগুলি রবিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে। তুমুল তৎপরতা দেখা গিয়েছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে।
এদিন দিল্লির বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে বন্যা মোকাবিলার বিষয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তারপরই স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানানো হয়। একই সঙ্গে যথা সম্ভব ওয়ার্ক ফ্রম হোমের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, বন্যার জলে যখন চারিদিক থই থই করছে, তার মধ্যেই দিল্লিতে বৃহস্পতিবার থেকেই পানীয় জলের সঙ্কট তৈরি হয়েছে। পানীয় জলের সরবরাহ এদিনই প্রায় এক চতুর্থাংশ কমে গিয়েছে। আসলে যমুনার জলে প্লাবিত দিল্লির তিনটি ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট’। কেজরিওয়াল বলেছেন, ‘ পানীয় জলের রেশনিং করতে হবে। কারণ, ৩টি জল শোধনাগার বন্ধ রয়েছে। দু-এক দিনের জন্য জল সংকট দেখা দেবে দিল্লিতে। যমুনার জল নেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেগুলি চালু করার চেষ্টা করব।’ তিনি তিনটি জল শোধনাগার সম্পর্কে বলেছিলেন।