যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ডুরান্ড সেমিফাইনালে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে শুরু থেকেই নামানো হল সুনীল ছেত্রীকে। অভিজ্ঞতার কারণেই কি এমন সিদ্ধান্ত? সুনীল ছেত্রী গত কয়েক ম্যাচে পরিবর্ত হিসেবেই নেমেছেন। শুরু থেকে খেলানোর সিদ্ধান্ত কাজে দিল বেঙ্গালুরু। ম্যাচের ২৬ মিনিটে চোটে মাঠ ছাড়েন মোহনবাগান ক্যাপ্টেন শুভাশিস বসু। এরপরই চাপ বাড়ে। শুভাশিসের জায়গায় নামানো হয় দীপেন্দু বিশ্বাসকে। তবে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন যে সহজে হাল ছাড়বে না, এ আর নতুন কী! ০-২ পিছিয়ে থেকে ম্যাচ টাইব্রেকারে নিয়ে যায় মোহনবাগান সুপার জায়ান্ট। মাঠে শুধু মোহনবাগানই জিতল না, জিতল ফুটবল। পুলিশি বাধা পেরিয়েই প্রতিবাদে সামিল সমর্থকরা। তিন প্রধানের মিলিত রং, এক স্লোগান সেই টিফোতে।
শুরু থেকে দু-দলেরই সতর্ক খেলা। অবশেষে ৪০ মিনিটে গোলের মুখ খোলে। যদিও সেটা অ্যাওয়ে টিমের জন্য। ম্যাচের ৪০ মিনিটে বিনিথ ভেঙ্কটেশকে বক্সের মধ্যে ফাউল করেন লিস্টন কোলাসো। রেফারি পেনাল্টি দেন। তর্কাতর্কিতে মনবীরও হলুদ কার্ড দেখেন। পেনাল্টি থেকে বেঙ্গালুরু এফসিকে এগিয়ে দেন কিংবদন্তি সুনীল ছেত্রী। দ্রুতই ম্যাচে ফেরার সুযোগ ছিল মোহনবাগানের কাছে। যদিও ভাগ্য সঙ্গ দেয়নি। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে অ্যালবার্তো রডগিজের হেডার পোস্টে, তার আগে লিস্টন কোলাসোর শটও। দুটি দুর্ভাগ্যজনক মুহূর্ত মোহনবাগানের।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই বিনিথ ভেঙ্কটেশের সৌজন্য়ে ২-০ এগিয়ে যায় বেঙ্গালুরু এফসি। গোল শোধের দুর্দান্ত সুযোগ এসেছিল মোহনবাগানের কাছে। বেঙ্গালুরু এফসি গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং সান্ধুর ভুলে বল পান এ মরসুমে মোহনবাগানে সই করা গ্রেগ স্টুয়ার্ট। ফাঁকা গোল। হেড করলেও বল টার্গেটে রাখতে ব্যর্থ স্টুয়ার্ট। অবশেষে ৬৯ মিনিটে পেনাল্টি থেকে এক গোল শোধ দিমিত্রি পেত্রাতোসের। ফের ম্যাচে ফেরে মোহনবাগান। সমর্থকদের উচ্ছ্বাসও।
নির্ধারিত সময়ের পাঁচ মিনিট আগে অনিরুদ্ধ থাপার গোলে সমতা ফেরায় মোহনবাগান। ম্যাচে প্রাণ ফরে। হেড ক্লিয়ার হলেও ফিরতি বলে বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে গোল করেন অনিরুদ্ধ থাপা। ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালেও টাইব্রেকারে জিতেছিল মোহনবাগান। তবে এখানে প্রতিপক্ষ গোলে গুরপ্রীত সিং সান্ধুর মতো প্লেয়ার থাকায় কাজটা আরও কঠিন ছিল।
টাইব্রেকারে দু-দলই সমান তালে চলতে থাকে। গোলকিপারের হাতেই ম্যাচের চাবি। প্রথম তিন শটে দু-দলই একশো শতাংশ রেকর্ড ধরে রাখে। মোহনবাগানের হয়ে চতুর্থ কিক পেত্রাতোসের। গোলও করেন। অবশেষে চতুর্থ কিক বাঁচান বিশাল কাইথ। আর সেখান থেকেই উচ্ছ্বাস শুরু। পঞ্চম শটে গ্রেগ স্টুয়ার্ট গোল করলেই ফাইনালে। যদিও স্টুয়ার্টের কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে বাঁচিয়ে দেন গুরপ্রীত সিং সান্ধু। অপেক্ষা বাড়ে দু-দলেরই। বেঙ্গালুরুর পঞ্চম শট বাঁচিয়ে দলের ফাইনাল নিশ্চিত করেন বিশাল কাইথ।