আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হেসেখেলে হারাল টিম ইন্ডিয়া। এক ইনিংস ও ১৪০ রানে জয় পেয়ে দেশের মাটিতে শুভ সূচনা করলেন নতুন অধিনায়ক শুভমান গিল। প্রায় একপেশে এই ম্যাচে ভারতের দাপটের সামনে নাজেহাল হয়ে পড়ল এক সময়কার ‘বাঘ’ ক্যারিবিয়ানরা।
প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে বড় রান তুলতে ব্যর্থ হয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ১৬২ রানে গুটিয়ে যায় তারা। সেই জবাবে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন ভারতীয় ব্যাটাররা। একের পর এক ব্যাটসম্যান রান পান। কেএল রাহুল ও ধ্রুব জুরেলের পর শতরান পান রবীন্দ্র জাদেজা। তাঁদের দাপটে ভারতের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৪৪৮। ২৮৬ রানের বিশাল লিড নেওয়ার পর তৃতীয় দিনের শুরুতেই ডিক্লেয়ার ঘোষণা করেন অধিনায়ক গিল।
দ্বিতীয় ইনিংসে নামার পর আরও ভেঙে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পিচে লাল সুরকির দাগ স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। নির্দিষ্ট জায়গায় বল পড়লেই তা ভীষণভাবে ঘুরছিল। সেই সুযোগ কাজে লাগান ভারতীয় স্পিনাররা। ‘স্যর’ রবীন্দ্র জাদেজা তুলে নেন চারটি উইকেট। তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন কুলদীপ যাদব (২ উইকেট) ও ওয়াশিংটন সুন্দর।
তবে শুধু স্পিনার নয়, পেসাররাও ছড়ালেন দাপট। মোহাম্মদ সিরাজ দুর্দান্ত ফর্মে থেকে তিন উইকেট নেন। তাঁর বলেই সাজঘরে ফেরেন জাস্টিন গ্রিভস। সেই ক্যাচে দারুণ ভূমিকা ছিল তরুণ ক্রিকেটার নীতীশ রেড্ডির। স্কোয়ার লেগে থেকে অসাধারণ ডাইভ দিয়ে তালুবন্দি করেন বল। প্রথম উইকেটের কৃতিত্ব তাই অনেকটাই তাঁর।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটাররা ভারতের বোলিং আক্রমণের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি। লাঞ্চের আগে ৫ উইকেটে ৬৬ রান করেছিল তারা। কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন আলিক আথাঞ্জে (৩৮) ও জাস্টিন গ্রিভস (২৫)। কিন্তু তাঁদের আউট হওয়ার পর ভেঙে যায় ব্যাটিং লাইন। শেষমেশ ১৪৬ রানে অলআউট হয় তারা।
এই জয়ের তাৎপর্য আলাদা। কারণ এর আগে ঘরের মাঠে শেষ টেস্ট সিরিজটা ভারতের একেবারেই ভালো কাটেনি। ২০২৪ সালের অক্টোবরে নিউজিল্যান্ডের কাছে চুনকাম হয়েছিল রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলিদের। এরপর অস্ট্রেলিয়া সফরও হতাশাজনক ছিল। সেখান থেকেই ভারতীয় ক্রিকেটে বড় পরিবর্তন আসে। নতুন অধিনায়কত্বের দায়িত্ব পান শুভমান গিল। ইংল্যান্ড সফরে সিরিজ ড্র করে ফিরেছিল ভারত। আর এবার ঘরের মাঠে ৩৬৮ দিন পর এল টেস্ট জয়ের স্বাদ।
সব মিলিয়ে ক্যারিবিয়ানদের বিরুদ্ধে এই জয় শুধু একটি ম্যাচ জেতা নয়, বরং ভারতীয় টেস্ট দলের জন্য নতুন অধ্যায়ের সূচনা। শুভমান গিল অধিনায়ক হিসেবে আত্মবিশ্বাসী সূচনা করলেন। দলের তরুণ ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সও আশাব্যঞ্জক। সামনে আরও বড় চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে, কিন্তু ঘরের মাঠে এই জয় ভারতকে নিঃসন্দেহে অনেকটাই এগিয়ে রাখবে।

