ডেবরায় দুই যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার ৭

চিত্ত মাহাতো

পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা থানার ভরতপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় দুই যুবতীকে গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছিল তাদের মেদিনীপুর আদালতে তোলা হয়। বিচারক অভিযুক্তদের চারজনকে পুলিশি হেপাজতের এবং তিনজনকে টিআই পেরোডের নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গিয়েছে, খড়গপুরের বাসিন্দা ওই যুবতীরা একটি ডান্স গ্রুপের সদস্য। একটি অনুষ্ঠানের জন্য রবিবার তারা ডেবরা থানার বৌলাসিনি ভগবানপুর এলাকার মাড়োতলায় একটি বাড়িতে নাচগানের মহড়া দেয়। বিকাল ৬টা নাগাদ মহড়া শেষ হওয়ার পর বাড়ি ফেরার বাস না পেয়ে কাঁসাই নদীর ওপারে ভরতপুর এলাকায় এক পরিচিতা মহিলার বাড়িতে আশ্রয় চান। ওই মহিলা একসময় এই দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মহিলা তাঁদের বাড়ি আসতে বলেন। ৩ যুবতী এবং ২ যুবক নদী পেরিয়ে মহিলার বাড়িতে যান। গরিব ওই বিধবা মহিলার ১৫ বছরের একটি ছেলে ও শ্বশুর রয়েছে। তার একটি মাত্র রুমে সবার থাকার ব্যবস্থা হয়। দুই যুবক ও মহিলার ছেলে ও শ্বশুর তক্তপোষে এবং ওই মহিলা ও তিন যুবতী মেঝেতে ঘুমিয়ে ছিল।
রাতে কয়েকজন যুবক বাড়ির দরজায় ধাক্কা দেয়। দরজা না খোলায় দরজা ভেঙে ওই মহিলা এবং তাঁর শ্বশুর ও ছেলেকে তুলে নিয়ে যায় একটি ক্লাবে। বাড়িতে অসামাজিক কাজ করা হচ্ছে বলে সেখানে তাঁদের অভিযুক্ত করে ব্যাপক মারধরও করা হয়। এরপর ওই তিন যুবতীকে তুলে আনার চেষ্টা করা হয়। এক যুবতী অন্ধকারে পালিয়ে যান। বাকি ২ যুবতীকে তুলে আনা হয় একটি পুকুর পাড়ের পরিত্যক্ত ঘরে। সেখানেই চলে বর্বরতা। পরপর ধর্ষণ করা হয় দুই যুবতীকে। ভোরের দিকে যুবতীদের ছেড়ে দিয়ে এলাকা ছাড়তে বলা হয়।
যুবতীদের একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ডেবরা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
সোমবার দুপুর নাগাদ ডেবরা থানায় লিখিত অভিযোগ জানায় ওই মহিলা ও ব্যান্ডের এক যুবক। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। অভিযুক্তদের মধ্যে মানস মুর্মু, স্বপন হেমব্রম, বিমল মুর্মু, শম্ভু টুডুকে ৬ দিনের পুলিশি হেপাজত এবং বাবলু মুর্মু, অমিত মুর্মু, বিকাশ সরেনকে টিআই প্যারেডের নির্দেশ দিয়েছে মেদিনীপুর আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 5 =