অকালে চলে গিয়েছে সন্তান। তবে শেষ মুহূর্তে মন শক্ত করলেন বাবা-মা। সন্তানের পার্থিব শরীর না থাক, তবু সে বেঁচে থাকুক অন্যের দৃষ্টি হয়ে। ১০ বছরের সন্তানের অকাল মৃত্যুতে শোকে ভেঙে পড়া বাবা-মা শেষ মুহূর্তে মৃত সন্তানের চোখ দান করে সমাজের কাছে দৃষ্টান্ত রাখলেন।চোখ দিয়েই দেখবে এবার আরও দু’টি ছোট ছোট ছেলেমেয়ে।
জানা গিয়েছে, স্ক্রাব টাইফাসে আক্রান্ত হয়েছিল ওড়িশার রৌরকেলার বাসিন্দা ১০ বছরের হার্দিক রায়। তার মামার বাড়ি লেকটাউনে। গত রবিবার কলকাতার হাসপাতালে মৃত্যু হয় তার। হার্দিকের বাবা পেশায় কলেজের অধ্যাপক। তিনি দৃষ্টিশক্তিহীন। তিনিই ছেলের মৃত্যুর পরে সিদ্ধান্ত নেন, সন্তানের চোখ দান করবেন। যাতে অন্যরা চোখে দৃষ্টি পায়।
এর পরেই পদ্ধতি মেনে হার্দিকের চোখ সংগ্রহ করা হয় তার মৃত্যুর পরে। তার পরে রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ অপথ্যালমোলজিতে একটি কর্নিয়া প্রতিস্থাপিত হয়, মালদহের বৈষ্ণবনগরের ১৪ বছরের এক কিশোরীর চোখে। ক্লাস সেভেনের ছাত্রী সে। পরিবার সূত্রের খবর, গত বছর সে ফল পাড়তে গাছে উঠেছিল। সেই গাছে একটি মৌচাক ছিল, যেখান থেকে একটি মৌমাছি কামড়ে দেয় কিশোরীর ডান চোখে। সে গাছ থেকে পড়ে যায় যন্ত্রণায়। পরে চোখ থেকে মৌমাছির হুল বার করা গেলেও, ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে সে।
অন্যদিকে, বীরভূমের পাড়ুইয়ের ক্লাস ফোরের এক ছাত্র গত বছরের মার্চ মাসে পেনসিল ব্যাটারি নিয়ে খেলার সময়ে, সেই ব্যাটারির সঙ্গে তার পেঁচিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ করে ফেলে। তখনই ব্যাটারি ফেটে গুরুতর জখম হয় তার বাঁ চোখ। অস্ত্রোপচার করে ব্যাটারির টুকরো বের করা গেলেও, চোখ বাঁচানো যায়নি। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তারই চোখে হার্দিকের দ্বিতীয় কর্নিয়া প্রতিস্থাপিত হয়েছে।
দু’জনের প্রতিস্থাপনই সফল হয়েছে বলে জানা গেছে, খুব তাড়াতাড়ি তাদের ছাড়া হবে হাসপাতাল থেকে।