মরক্কোর ভয়াবহ ভূমিকম্প। যা উস্কে দিল তুর্কি-সিরিয়ার স্মৃতি। মরক্কো প্রশাসন সূত্রে খবর, সময়ের সঙ্গে সমানুপাতে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। আপাতত মরক্কো প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, এদিনের এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন ৬০০-র বেশি মানুষ। কম্পনের জেরে একাধিক বহুতল হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার ফলেই উত্তর আফ্রিকার দেশটিতে শুরু হয়েছে মৃত্যু মিছিল। ধ্বংসস্তূপের নীচে আরও অনেকে চাপা পড়ে রয়েছেন বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার সম্ভাবনাই প্রবল।
সূত্রে খবর, শুক্রবার রাতে মরক্কোর মারাকেশ এলাকায় কম্পন অনুভূত হয়। মার্কিন জিওলজিক্যাল সার্ভের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। অন্যদিকে মরক্কোর জিওফিজিক্যাল সেন্টার জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ধরা পড়ে ৭.২। ভূমিকম্পের উৎসস্থল আটলাস পাহাড়ের ওকাইমেডেন এলাকা বলে জানা গিয়েছে। এরপর শনিবার ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করে মরক্কো প্রশাসন। সেখানকার অন্তর্দেশীয় মন্ত্রকের তরফে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ভূমিকম্পে ৬৩২ জনের মৃত্য়ু হয়েছে। মারাকেশ ছাড়াও মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে আল-হাউজ, ওয়ারজাজেট, আজিলাল, চিচাউয়া ও তারউদান্তের মতো পুর এলাকার। ধ্বংসস্তূপ থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ১৫৩ জনকে। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।’
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, ২০ সেকেন্ডের বেশি সময় ধরে কম্পন অনুভূত হয়। যার জেরে চোখের নিমেষে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে একের পর এক বহুতল। উল্লেখ্য মরক্কোর মারাকেশ এলাকা প্রাচীন ও ঐতিহ্যশালী শহর হিসেবে পরিচিত। ভূমিকম্পে সুপ্রাচীন মসজিদ ভেঙে মাটিতে মিশে গিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে। এদিকে সূত্রে খবর, মরক্কোর পাশাপাশি পর্তুগাল ও স্পেনেও কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পের আফটার শকের কারণে কেঁপে ওঠে ইউরোপের ওই দুই দেশের বেশ কিছু এলাকা। তবে সেখানে হতাহতের কোনও খবর মেলেনি।
শনিবার ভূমিকম্পের খবর পেতেই নিহতদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলনে উদ্বোধন করার মাঝেই তার মধ্যেই এক্স হ্যান্ডেলে অর্থাৎ টুইটারে একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে মরক্কোকে সব ধরনের সাহায্য়ের আশ্বাস দেন তিনি। টুইটারে প্রধানমন্ত্রী লেখে, ‘ভূমিকম্পে মরক্কোয় বহু মানুষের মৃত্য়ুতে শোকাহত। এই দুঃখের সময় মরক্কোবাসীর পাশে আছি। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই।’ আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
চলতি বছরের শুরুতেই ভয়াবহ ভূমিকম্পে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় তুর্কির গাজিয়াতেপ এলাকা। কম্পন অনুভূত হয়েছিল পাশের সিরিয়াতেও। দুই দেশ মিলিয়ে ভূমিকম্পে ২৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্য়ু হয়েছিল।