দলিত মেয়েকে গণধর্ষণ হায়দরাবাদের, ক্ষোবে ফুঁসছে জনতা

হায়দরাবাদে গণধর্ষণের শিকার বছর ১৫-র দলিত এক কিশোরী। রবিবার সকাল সাড়ে নটাতেই বাড়িতে হানা দিয়েছিল গাঁজার নেশায় চূড় হয়ে আসে আট যুবক। দুর্ভাগ্যবশত সেই সময় বাড়িতে প্রাপ্তবয়স্ক কেউ ছিল না। ১৫ বছরের মেয়েটিকে টানতে টানতে উপরের তলায় নিয়ে যায় তিনজন। আর বাকিরা, তার ভাই এবং বাড়িতে থাকা আরও কয়েকটি শিশুকে ছুরি দেখিয়ে আটকে রাখে নিচের তলায়। এরপর পালা করে ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে ওই তিন যুবক। সোমবার এমনই এক নক্কারজনক ঘটনা ঘটে হায়দরাবাদের উপকণ্ঠে মীরপেটের নন্দনবনম কলোনিতে। এই ঘটনায়ক্ষোভে ফুঁসছে হায়দরাবাদ। অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবিতে রাস্তায় নেমেছে বিরোধীরা। ।

এই ঘটনায় মীরপেট থানার পুলিশ সূত্রে যে খবর মিলছে তাতে এই ঘটনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ জানিয়েছে নির্যাতিতা কিশোরীর ভাই। তারা দলিত সম্প্রদায়ের মানুষ। আগে দক্ষিণ হায়দরাবাদের লাল বাজার এলাকায় থাকতেন তাঁরা। তবে মাসখানেক আগে তাঁদের বাবা-মা দুজনেই মারা যান। এরপর কয়েক সপ্তাহ আগে মীরপেটে এক খুড়তুতো দাদার বাড়িতে থাকা শুরু করেন তাঁরা। দিলসুখনগরের এক কাপড়ের দোকানে সেলসগার্ল হিসেবে কাজ করে মেয়েটি। আর তার ভাই কাজ করেন একটি ফ্লেক্স বোর্ডের দোকানে।

এদিকে রবিবার সকালে বাড়িতে বড় কেউ ছিল না। আশেপাশের বাড়ির আরও তিনটি শিশু তাদের বাড়িতে এসেছিল। সেই সময়ই ছুরি হাতে ওই আট যুবক জোর করে বাড়িতে ঢুকে পড়েছিল। ঘণ্টা আধেক পর, ওই যুবকরা পালানোর পর মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে নীচে নেমে আসে। এরপর পুরো ঘটনা জানায় তাঁর ভাইকে এরপর বছর ১৪-র কিশোরটিই প্রতিবেশীদের ঘটনাটি জানায়। এরপরই খবর যায় পুলিশে।

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের গতিবিধি সম্পর্কে জানতে ক্লোজ সার্কিট টেলিভিশন ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করা হয়েছে। তবে, এখনও অভিযুক্তদের ধরা যায়নি। তাদের ধরতে পুলিশের সাতটি বিশেষ দল গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে নাবালিকাকে গণধর্ষণ করা এবং যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা বা পকসো আইনের প্রাসঙ্গিক ধারায় একটি মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষা এবং তাঁর বয়ান রেকর্ড করার জন্য তাঁকে ‘সখী’ কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে অন্তত দুজনকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তারা দুজনেই দাগী অপরাধী বলে জানিয়েছে পুলিশ। কী কারণে এই অপরাধ করল তারা, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে তাদের আগে থেকে কোনও শত্রুতা ছিল কিনা, তাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

এদিকে মঙ্গলবার মীরপেট এলাকায় এই নৃশংস অপরাধের খবর ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফুঁসে ওঠেন স্থানীয়রা। প্রতিবাদ জানাতে পথে নামেন খোদ মীরপেটের মেয়র, পারিজাত রেড্ডি। মেয়রের নেতৃত্বে ধর্ষিতার বাড়ির কাছে একটি প্রধান সড়ক অবরোধ করেন কংগ্রেস কর্মীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিল বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষও।  পরিস্থিতি সামাল দিতে, পারিজাত রেড্ডি এবং আরও কয়েকজন কংগ্রেস নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি যাতে না ঘটে, তার জন্য ওই এলাকায় বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =