আগামী ১০ এবং ১১ এপ্রিল দিল্লির যন্তর মন্তরে ধরনায় বসতে চলেছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। কেন্দ্রীয় হারে ডিএ-র দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। অনশন আন্দোলনও করেছেন তাঁরা। আর এবার শুধু ডিএ-এই নয়, পাশাপাশি শূন্য পদে স্বচ্ছ ও স্থায়ী নিয়োগের দাবিও তোলা হয়েছে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে। দিল্লির রাস্তায় এই মঞ্চের প্রতিনিধিরা ধরনায় বসলে, আন্দোলন যে আলাদা মাত্রা পাবে, তা স্পষ্ট। এদিকে কিছুদিন আগেই আন্দোলনকারীদের সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসার পরামর্শ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই প্রসঙ্গে আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে তিনজন প্রতিনিধিকে বেছে নেওয়ার কথা বলেছিলেন তিনি। যাঁরা কথা বলবেন সরকারের সঙ্গে। ১৭ তারিখের মধ্যে আলোচনা শেষ করার পরামর্শও দিতে দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে। এরপরই সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকেও জানানো হয়, তাঁরা সরকারের সঙ্গে আলোচনায় যেতে রাজি।
কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এই পরামর্শের পরও আন্দোলনের ঝাঁঝ কমাতে নারাজ আন্দোলনকারীরা। অর্থাৎ, এর থেকে স্পষ্ট যে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতার দাবিতে আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়ছে ক্রমশই। কলকাতা থেকে এবার সেই আঁচ পৌঁছাতে চলেছে দিল্লিতে। শহিদ মিনার চত্বরে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন চলছে গত ২ মাসেরও বেশি সময় ধরে, সেই আন্দোলনই এবার হবে দিল্লিতে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকেও অনুমতি মিলেছে ইতিমধ্যেই। এদিকে সূত্রে খবর, ৫০০ জনের বেশি আন্দোলনকারী ওই ধরনায় অংশ নিতে পারবেন না। এছাড়াও কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে। এই কর্মসূচির কথা আগেই জানানো হয়েছিল যৌথ মঞ্চের তরফে। এবার সবুজ সংকেত এল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফ থেকে এই সবুজ সংকেত আসার পরই দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের কয়েকজন। সূত্রে এ খবরও মিলছে, হাওড়া রাজধানী এবং শিয়ালদা রাজধানীতে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। পাশাপাশি সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের হাতে তাঁরা স্মারকলিপি তুলে নেবেন। এরই পাশাপাশি দিল্লির যন্তর মন্তরে এবং কলকাতায় শহিদ মিনারের মঞ্চেও একযোগে চলবে ধরনা কর্মসূচি। প্রসঙ্গত, কলকাতায় আন্দোলন চলাকালীন বিভিন্ন সময়ে বহু রাজনৈতিক নেতাকে দেখা যায় ধরনা মঞ্চে আন্দোলনকারীদের পাশে দাঁড়াতে। পাশাপাশি বিরোধী দলের নেতারা বারবার হুঁশিয়ারিও দেন, রাজ্য সরকার কথা না শুনলে আন্দোলনের মাত্রা বাড়বে আরও, শহিদ মিনার ছাড়িয়ে পৌঁছে যাবে অনেক দূর।
এদিকে ১১ এপ্রিল বিচারপতি দীনেশ মাহেশ্বরী ও সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলাটি ওঠার কথা। এই প্রসঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীল জানান, ‘সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকারের স্পেশাল লিভ পিটিশন খারিজ হবে বলে আমরা আশাবাদী। এই লড়াইটা দীর্ঘদিন ধরে লড়তে হচ্ছে। সরকারি কর্মীদের পক্ষেই রায় যাবে বলে আমরা আশাবাদী।’ উল্লেখ্য, চলতি বছর রাজ্য বাজেটের দিন সরকারি কর্মীদের জন্য তিন শতাংশ বর্ধিত ডিএ-র কথা ঘোষণা করেন চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। পাশাপাশি এও জানানো হয় যে, কেন্দ্র টাকা দিচ্ছে না, তাই ডিএ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না সরকারি কর্মীদের। তবে তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি রাজ্য সরকারি কর্মীদের।