কোচিং সেন্টারের আড়ালে চিনে টাকা পাচার! দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়া কোচিং সেন্টারের টাকা লেনদেনে নজর দিতেই চোখ কপালে উঠল এনফোর্সমেন্ট ডিরক্টরেটের। সংস্থাটি থেকে ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করে ইডি।
‘নিট’ বা আইআইটিতে চান্স পাইয়ে দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেখে অনলাইন এই সংস্থায় পড়তে আসত প্রচুর পড়ুয়া। নামমাত্র টাকা ‘এনরোলমেন্ট ফি’ হিসাবে নিয়ে এরপর মোটা কোর্স ফি নিত এই অনলাইন কোচিং সেন্টার।এমনিতে অনলাইন কোচিং সেন্টারটি ঘিরে কোনও সমস্যা ছিল না। কিন্তু এই সংস্থার টাকার লেনদেনের দিকে নজর দিতে গিয়েই চোখ আটকে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের। তাঁরা জানতে পারেন, ওই পঠনপাঠন সংস্থাটির কোটি কোটি টাকা পাচার হয়েছে চিনে। সেই সূত্র ধরেই ফের তদন্ত শুরু করে ইডি। জানতে পারে যে, ওই সংস্থাটি পরিচালিত হচ্ছে চিন থেকেই। জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সংস্থাটির ভারতীয় কর্তারা স্বীকার করেছে যে, চিনের কর্তাদের নির্দেশেই চলছে এই কোচিং সেন্টার।
ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে থাকা একটি বেসরকারি শিক্ষাকেন্দ্রর উপর নজর পড়ে গোয়েন্দাদের। ওই শিক্ষাকেন্দ্রটি থেকে যে বেআইনি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে, এমনই সন্ধান পান গোয়েন্দারা। সেই সূত্র ধরেই ওই সংস্থার দপ্তরে ইডি তল্লাশি চালিয়ে প্রথম দফায় ৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা উদ্ধার করে। কিন্তু ওই টাকা উদ্ধারের পরও একইভাবে টাকা পাচার করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। পরের দফায় ইডি তল্লাশি চালিয়ে ৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা উদ্ধার করে। মোট ১২ কোটি ২৫ লাখ টাকা ইডি বাজেয়াপ্ত করে।ওই বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিই একটি বিশেষ অনলাইন কোচিং সেন্টার চালায়। সেই কোচিং সেন্টারটি এনআইআইটি ও আইআইটিতে সুযোগ পাওয়ার জন্য ক্লাস করায়। এ ছাড়াও বিভিন্ন ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদেরও অনলাইন ক্লাস নেয় ওই কোচিং সেন্টার। বিশেষ করে সিবিএসই, আইসিএসসি-র বহু ছাত্রছাত্রীই ওই কোচিং সেন্টারে ক্লাস করে। সংস্থাটির দাবি, প্রায় ৭০ লাখ ছাত্রছাত্রীকে পড়িয়েছে এই অনলাইন কোচিং সেন্টার।
সংস্থার মালিক লিউ কান চিনেরই বাসিন্দা। বেজিং-সহ চিনের একাধিক শহরে তাঁর বাড়ি ও অফিস রয়েছে। ইডির দাবি, লিউ কানের নির্দেশেই এই দেশে চলে এই কোচিং সেন্টার। কিন্তু ওই কোচিং সেন্টারের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে তোলা ফি হিসাবে এখনও পর্যন্ত ৮২ কোটি ৭২ লাখ টাকা পাচার হয়েছে চিন, ‘সার’ বা স্পেশাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ রিজিওনস অফ চায়না, হংকংয়ে।