অপরাধীরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য কি না প্রশ্ন শীর্ষ আদালতের

রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন রোখার চেষ্টা করেছিল শীর্ষ আদালত। ২০২০ সালে একটি মামলায় শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল প্রতিটি রাজনৈতিক দল তাদের ওয়েবসাইটে ও সোশ্যাল মিডিয়াতে নিজেদের প্রার্থীদের ফৌজদারি মামলা সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য প্রকাশ করার।  শুধু তাই নয়, নির্দেশ দেওযা হয়েছিল নির্বাচন কমিশনেও জমা দিতে হবে এই সম্পর্কিত নথি। যদিও এমন একাধিক উদ্যোগের পরেও রাজনীতিতে দুর্বৃত্তায়ন রোখ যায়নি। অধিকাংশে রাজ্যে বিধায়ক ও সাংসদদের একাংশের বিরুদ্ধে রয়েছে খুন, ধর্ষণ, অপহরণের মতো ফৌজদারি মামলা। এবার এই ইস্যুতে শীর্ষ আদালতের তরফ থেকে কেন্দ্র এবং নির্বাচন কমিশনের কাছে জানতে চাওয়া হল এঁরা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্য কি না সেই ব্যাপারে। প্রশ্ন তোলা হল, এমন ব্যক্তির জনপ্রতিনিধি হওয়া উচিত কি না তা নিয়েও। কারণ, এই বিষয়ে বিচারপতি কে এম জোশেফ এবং বি ভি নাগারত্নার বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ‘জাতি হিসেবে টিকে থাকতে হলে চরিত্র ও মূল্যবোধ থাকতে হবে আমাদের। দুর্নীতির ভয়াবহতার দিকে তাকিয়ে দেখুন। পশ্চিমের দেশগুলোতে এমনটা দেখা যায় না। এখানে তৃণমূল পর্যায়ে দুর্নীতি রয়েছে। এটাই আসল সমস্যা।’

যে সব প্রার্থীদের বিরুদ্ধে বড় অপরাধের অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনে লড়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি হোক তাঁদের বিরুদ্ধে, এমনই এক দাবি এনে দেশের শীর্ষ আদালতে জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়। তারই প্রেক্ষিতে কেন্দ্র এবং জাতীয় নির্বাচনের কমিশনের মতামত জানতে চাইল সুপ্রিম কোর্ট। কারণ, মামলাকরী আইনজীবী প্রশ্ন তোলেন, ‘দুর্নীতি তথা অপরাধের অভিযোগে সরকারি কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়। যে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নামে অভিযোগ রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?” তিনি কটাক্ষ করেন, ‘অপারধের অতীত থাকলে পিয়নের চাকরিও মেলে না, অথচ সেই ব্যক্তি সংসদের সদস্য হতে পারেন, এমনকী আইনমন্ত্রীও হতে পারেন।’

এদিকে শীর্ষ আদালত সূত্রে খবর, বিচারপতি কে এম জোশেফ এবং বি ভি নাগারত্নার বেঞ্চ কেন্দ্র এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এই সময়ের মধ্যে জানাতে হবে, অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির নির্বাচনে লড়ার বিষয়ে তাদের মতামত। মামলার আগামী শুনানি এপ্রিল মাসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + ten =