কামব্যাক শব্দটি আমাদের খুব প্রিয়। কারণ জীবন হোক বা খেলার মাঠ, একবার হারিয়ে ফেলা জায়গা ফিরে পাওয়া ভীষণ কঠিন। যদি পাওয়া যায়, তাহলে সেটাকেই আমরা কামব্যাকের নাম দিই। আর ক্রিকেটের সঙ্গে কামব্যাক শব্দটির যেন আত্মিক সম্পর্ক। ক্রিকেটাররা হারানো ফর্ম ফিরে পেয়ে কামব্যাক করেন। কেউ চোট সারিয়ে কামব্যাক করেন। কারও আবার দীর্ঘদিন টিমের বাইরে কাটানোর পর দলে কামব্যাক হয়। এতো গেল ক্রিকেটারদের কথা। যদি বলা হয়, ক্রিকেটের কামব্যাকের কথা! তাও আবার ১২৮ বছর পর। অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। একশোর বছরেরও বেশি সময় পরে কামব্যাকের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েছে ক্রিকেট। অলিম্পিকে ক্রিকেটকে অন্তর্ভুক্ত করার দীর্ঘদিন ধরে প্রয়াস চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল। প্রাথমিকভাবে সেই স্বপ্নে ধাক্কা লাগলেও হাল ছাড়ার পাত্র নয় আইসিসি। আর এই মুহূর্তে যা শোনা যাচ্ছে তাতে আইসিসির স্বপ্ন সত্যি হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৮ সালের লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে ক্রিকেটের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা প্রবল। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি চাইছে ক্রিকেট দক্ষিণ এশিয়ার বাজার ধরতে। ক্রিকেট অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত হলে ভিউয়ারশিপ বাড়বে চড়চড়িয়ে। ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ -এর আধিপত্য ছড়িয়ে পড়বে সারা বিশ্বে। তাই বেসবল বা সফটবল, ফ্ল্যাগ ফুটবল, ব্রেকডান্স, ক্যারাটে, কিক বক্সিং, স্কোয়াশ, রেসিংয়ের মতো ইভেন্টগুলির পাশাপাশি ক্রিকেটও ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিকে অন্তর্ভুক্ত করার জোর সম্ভাবনা। ২০৩২ সালের অলিম্পিকের আসর বসবে ব্রিসবেনে। সে দেশেও ক্রিকেট নিয়ে মাতামাতি চূড়ান্ত পর্যায়ে। তাই লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক থেকেই এর সূচনা করে দিতে চাইছে আইওসি। ভারতে বর্তমানে অলিম্পিক সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রি করা হয় কয়েকটি নির্দিষ্ট খেলার জন্য। অনুমান করা হচ্ছে যে, ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের সম্প্রচার সত্ত্ব বিক্রি হবে মাত্র ১৫.৬ মিলিয়ন পাউন্ডে। দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৮ লস অ্যাঞ্জেলস অলিম্পিক ও পরে ব্রিসবেন অলিম্পিকে ক্রিকেট থাকলে স্বত্ত্ব বেড়ে ১৫০ মিলিয়ন পাউন্ড হতে পারে। অলিম্পিকে ক্রিকেট শেষ কবে খেলা হয়েছিল? এখনও পর্যন্ত অলিম্পিকে ক্রিকেটের স্থান হয়েছে মাত্র একবার। ১৯০০ সালে প্যারিস অলিম্পিকে। তাও শুধুমাত্র গোল্ড মেডেলের ম্যাচ খেলা হয়েছিল। পরের অলিম্পিকে আর ঠাঁই হয়নি ব্যাটে বলের লড়াইয়ের। ১২৮ বছর পর অলিম্পিকে জেন্টেলম্যানস গেমের প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। আশায় বুক বেঁধেছে আইসিসি। ক্রিকেটও তার হারানো জায়গা ফিরে পাওয়ার অপেক্ষায়।