কলকাতা: নবম-দশমের পড়ুয়াদের জন্য বিনামূল্যে কোচিং সেন্টার!
বামপন্থী সংগঠনের এই উদ্যোগের নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিকল্প পাঠশালা।’ আর তা নিয়েই তুঙ্গে তরজা।
ফ্রি কোচিং সেন্টারের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষক অরূপ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। প্রতিটি সেন্টারে দেড়ঘণ্টা করে দু’টি ব্যাচে পড়ানো হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের। এত অল্প সময়ে পড়াশোনা করিয়ে রাজনীতি বোঝানো সম্ভব নয়। তবে রাজনীতি পিছু ছাড়ছে না। তার বড় কারণ পোস্টারের তলার লেখা, সিপিএম যাদবপুর পূর্ব এরিয়া কমিটি।
এই কোচিং নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়। তাঁর কথায়, সংগঠন বাড়ানোর জন্য প্রতিটি দলের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা থাকে। কিন্তু ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রাজনীতি ঢোকানো উচিত নয়।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এ হল বামেদের ঘুরে দাঁড়াতে পাড়ায় পাড়ায় জনসংযোগের উদ্দেশ্যে নতুন ভাবনা। একসময় শহরের প্রতিটি কলেজের ইউনিয়নে ক্ষমতায় ছিল এসএফআই। সেদিন অতীত। আজ যারা নবম-দশম শ্রেণিতে পড়ছে, তারাই ঢুকবে কলেজে। তাদের জন্য বিনামূল্যে কোচিং সেন্টার খুলেছে সিপিএম। বামপন্থী সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, উদ্দেশ্য একটাই। দুঃস্থ ছাত্রদের বিনে পয়সায় সমস্ত বিষয় পড়ানো। যার নাম ‘বিকল্প পাঠশালা।’ যাদবপুর এলাকা ছেয়ে গিয়েছে পোস্টারে। যেখানে লেখা রয়েছে, ‘নবম থেকে দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিনামূল্যে কোচিং।’
তবে, শত চেষ্টা সত্ত্বেও এমন উদ্যোগ থেকে রাজনীতি সরছে না। তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের কথায়, সংগঠন বাড়ানোর জন্য প্রতিটি দলের নিজস্ব চিন্তা ভাবনা থাকে। কিন্তু ছোট ছোট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে রাজনীতি ঢোকানো উচিত নয়। পড়াশোনা করাতে ডেকে যদি সিপিএম রাজনীতি বোঝায় সেটা ঠিক হবে না।
যদিও সিপিএমের যাদবপুর পূর্ব এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গড়ফা হাই স্কুল, সন্তোষপুর বিদ্যামন্দির, মুকুন্দপুর হাই স্কুলের মতো বিদ্যালয়ে অগুনতি প্রান্তিক ছাত্রছাত্রীরা পড়ে। তাদেরকেই সাহায্য করা হচ্ছে। দক্ষিণ কলকাতার যাদবপুর এলাকার মডার্ন ল্যান্ড গার্লস স্কুল, মডার্ন পার্ক এবং মুকুন্দপুরে কোচিং সেন্টার খুলেছে সিপিএম যাদবপুর পূর্ব এরিয়া কমিটি। এই মুহূর্তে ১৪ জন শিক্ষক সেখানে পড়াচ্ছেন। দলীয় সূত্রে খবর, অচিরেই সেই সংখ্যা ১৭-তে দাঁড়াবে।
একাংশের প্রশ্ন, শুধুই কি পড়াশোনা শেখানো হচ্ছে?
নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সদস্য সিপিএম নেতা অরূপ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, অন্য কিছু শেখানোর প্রয়োজন নেই। গত এগারো বছরে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা কোথায় দাঁড়িয়েছে সেটা একাদশ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরা বুঝতে পারছে। তাঁর কথায়, মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলছেন, কম পড়লেও হবে বেশি বেশি করে নম্বর দাও। এতে ওদের ভবিষ্যৎ তো অথৈ জলে।
এদিকে তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেছেন, ‘জনসংযোগ বাড়ানোর সিপিএমের এই উদ্যোগই আদতে জলে যাবে। বিধায়কের কথায়, ইংরেজি বন্ধ করে যাঁরা বাংলাকে শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে দিয়েছে তারা এখন ছাত্রবন্ধু সাজছে। সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা তাঁদের ফাঁদে পা দেবেন না।’