ভাঙড় ইস্যুতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সুরই যেন প্রতিধ্বনিত হল সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের গলাতেও। ‘যেখানেই বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে সেখানেই তৃণমূল সেখানেই গুন্ডামি মাস্তানি করছে’, তৃণমূল সরকারকে বিদ্ধ করে এমনই এক বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন সিপিএম নেতা মহম্মদ সেলিমের। আইএসএফ-তৃণমূল সংঘর্ষ প্রসঙ্গে শাসকদলকে একহাত নিয়ে সেলিমের দাবি, ‘যেখানেই বিরোধীরা মাথা তুলে দাঁড়াচ্ছে সেখানেই তৃণমূল গুন্ডামি মাস্তানি করছে। কিন্তু ওরা বুঝছে না গুন্ডামি-মাস্তানির দিন শেষ হয়ে এসেছে। ভাঙড়ে আইএসএফ-বামপন্থীদের এতটাই শক্তি আছে যে ওখানে গুন্ডা-মস্তানদের মাস্তানি শেষ করা যাবে।’ এর প্রত্যুত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানান, ‘এটা তো দাদাগিরির জায়গা নয়। মানুষের আশীর্বাদ না পেয়ে গায়ের জোরে দখল করতে যাওয়া, ওগুলো চলবে না। মানুষের প্রতিরোধ হবে। পুলিশ প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।’ অন্যদিকে গতকালের ঘটনায় ইতিমধ্যেই বহু আইএসএফ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলাও রুজু হয়েছে। দোষ প্রমাণিত হলে হতে পারে ১০ বছর পর্যন্ত জেল।
প্রসঙ্গত, শনিবার ছিল আইএসএফের প্রতিষ্ঠা দিবস। সে কারণেই বড় সভারও আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভাকে কেন্দ্র করে ভাঙড়ে অশান্তির সূত্রপাত। পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল তৃণমূল-আইএসএফ বচসা। বেলা বাড়তেই বচসা বদলে যায় সংঘর্ষে। প্রতিষ্ঠা দিবসে যোগ দিতে যাওয়া আইএসএফ কর্মীদের লক্ষ্য করে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। ইট, পাথর, বাঁশ, শেষে বোমা। কোনও কিছুই বাদ ছিল না দুপক্ষের সংঘর্ষে। নওশাদ সিদ্দিকীর গাড়িতেও হামলার অভিযোগ ওঠে। এদিকে তৃণমূলের তরফে অভিযোগ তোলা হয় আইএসএফের বিরুদ্ধে । দলীয় পার্টি অফিস ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ জানায় তৃণমূল। যা নিয়ে শনিবার দিনভর উত্তপ্ত থাকে বাংলার রাজনৈতিক মহল। এর রেশ মেলে রবিবার ভাঙড়েও। এদিকে তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলামের দাবি, ‘তিনটি পার্টি অফিস ভাঙা হয়েছে। শুধু ভাঙা হয়নি। ভেঙে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখানে পুলিশ দুর্বল। যথেষ্ট ফোর্স ছিল না। নওশাদ সিদ্দিকে এসবই পরিকল্পনা করে করছে।’ যদিও অভিযোগ অস্বীকার বিধায়ক তথা আইএসএফ নেতা নওশাদ সিদ্দিকি জানান, ‘আমরা ওরকম কাজ করি না। আর করবও না। ওরা বোম ব্লাস্ট করিয়েছিল। গুলি চালিয়ে ছিল। তার জন্য প্রশাসন আগে ব্যবস্থা নিক।’ এরইমধ্যে রবিবার সকালে আরাবুল ইসলামের বাড়ির সামনে থেকে উদ্ধার হয় বস্তা ভর্তি তাজা বোমা। এই ঘটনায় গ্রেপ্তারও করা হয় তিন আইএসএফ কর্মীকে।