বিধাননগর পুরসভার ভূমিকা নিয়ে এবার প্রশ্ন তুলল কলকাতা হাইকোর্ট। এলাকায় বেআইনি নির্মাণ নিয়ে কড়া মন্তব্য করতে দেখা গেল ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমকে অভিযোগ, বিধাননগর পুরসভা এলাকায় একাধিক জায়গায় বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে। কিন্তু সেইসব দেখেও কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না পুরসভা, এমনই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়। সুমন দাস নামে বিধাননগরের এক বাসিন্দা ২০২০ সালে একটি জনস্বার্থ মামলা করে। মামলকারীদের পক্ষে আদালতে তথ্য দিয়ে জানানো হয়, এই পুরসভা এলাকায় ৩৯টি প্লটে ৩৩৩টি নির্মাণ হয়েছে। যার মধ্যে ২০টি সিঙ্গল স্টোরেড বিল্ডিং বা একতলা বাড়ি, ৫৫ টি নির্মাণ দোতলা, ৬৬ টি নির্মাণ তিন তলা, ১১৩ টি নির্মাণ চার তলা, ৭৫ টি নির্মাণ পাঁচ তলা আর বাকিগুলি পাঁচতলার বেশি উঁচু। প্রসঙ্গত, ২০২০ সালে এই ইস্যুতে মোট ২ টি জনস্বার্থ মামলা হয়। আদালতের নির্দেশে ২০২১ সালে হলফনামা পেশ করেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব। ভবিষ্যতে যাতে আর এই ধরনের নির্মাণ না হয়, তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরও এলাকা জুড়ে একের পর এক নির্মাণ অবৈধভাবে মাথা তুলছে বলে অভিযোগ। পাশাপাশি মামলাকারী এও জানান, বিধাননগর পুরনিগমের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হলেও, আদতে তা হয়নি। এদিনের এই মামলার শুনানি শেষে বিধাননগর পুরসভার ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে রীতিমতো ভর্ৎসনা করতেও দেখা যায় ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিকে। সঙ্গে এও জানান, এই মামলায় হাইকোর্টের মন্তব্য, কোনওভাবেই বেআইনি নির্মাণ মেনে নেওয়া যায় না। পাশাপাশি প্রশ্ন তোলেন, এতদিন ধরে এমন নির্মাণ হয়ে চলেছে আর বিধাননগর পুরসভা কি চোখ বন্ধ করে ঘুমোচ্ছে কি না তা নিয়েও। সঙ্গে কঠোর নির্দেশ, আগামী ৩০ দিনের মধ্যে এইসব বেআইনি নির্মাণ নিয়ে পদক্ষেপ করতে হবে। নির্দেশে আরও বলা হয়, পুরসভার ইন্সপেক্টরদের দিয়ে একটি কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটিই এলাকার বেআইনি নির্মাণগুলি চিহ্নিত করবে। আগামী ১৫ মে, এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন পুরসভাকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।