৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ফের জেল হেফাজত অনুব্রতর

জেলেই থাকতে হবে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। বৃহস্পতিবার এমনাটই রায় আদালতের। গোরু পাচার মামলায় আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে এদিন পেশ করা হয় বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। শুনানির পর তাঁকে ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। এদিকে অনুব্রত মণ্ডলের তরফে এদিন জামিনের আবেদন করা হয়নি।

আসানসোল সিবিআই আদালত সূত্রে খবর, আধ ঘণ্টা ধরে এদিন এই মামলার শুনানি চলে। এরপর ফের অনুব্রতকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। এদিন শুনানি শুরু হওয়ার পর বিচারক সিবিআইয়ের তদন্তকারী অফিসার সুশান্ত ভট্টাচার্যকে ডেকে পাঠান। তদন্তকারী অফিসারের কাছে বিচারক জানতে চান বিগত ১৪ দিন ধরে এই মামলার তদন্ত কতদূর এগোল। বিচারকের প্রশ্নের জবাবে তাঁর হাতে বেশ কিছু নথি তুলে দেন সিবিআইয়ের তদন্তকারী আধিকারিক। যার মধ্যে রয়েছে সিউড়ি সেন্ট্রাল কো অপারেটিভ ব্যাঙ্কে অভিযান চালিয়ে সিবিআই যে ১৭৭টি ভুয়ো অ্যাকাউন্টের হদিশ পেয়েছে সেই নথি। এমনটাই খবর আদালত সূত্রে। নথি দেখে বিচারক এই অ্যাকাউন্টগুলি সম্পর্কে জানতে চান। জবাবে সিবিআই আধিকারিক জানান, এই অ্যাকাউন্টগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সিবিআই বিচারককে জানিয়েছে, এই অ্যাকাউন্ট গুলির মাধ্যমে টাকা দু’টি চাল কলের অ্যাকাউন্টে পৌঁছেছে। সেই চাল কলগুলির সঙ্গে অনুব্রতর সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর।

এদিকে সিউড়ি ওই সমবায় ব্যাঙ্কে একই ব্যক্তির বিরুদ্ধে বারবার স্বাক্ষর করে অ্যাকাউন্ট খোলা ও টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল। সেই নিয়ে সিবিআই আধিকারিকদের প্রশ্ন করেন বিচারক। তদন্তকারী অফিসার তখন জানান, ২০০টি অ্যাকাউন্ট একই ব্যক্তি স্বাক্ষর করে ওই অ্যাকাউন্টগুলি খুলেছে। একইসঙ্গে সিবিআই-এর তরফ থেকে এও জানানো হয়, অ্যাকাউন্টে নাম থাকা ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা জানতে পেরে পঞ্চায়েত অফিসে নথি জমা দিয়েছিলেন। সেখান থেকে হয়তো নথি বাইরে বেরিয়েছে। সরকারি অফিস থেকে কীভাবে নথি বাইরে বের হল সেটাও তদন্তের বিষয় বলে জানায় সিবিআই। পাশাপাসি তদন্তকারী আধিকারিকরা বিচারককে এও জানান, এ ব্যাপারে হ্যান্ড রাইটিং বিশেষজ্ঞদের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য গোরু পাচার মামলায় অগস্ট মাসে বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই। কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছিলেন অনুব্রত। কিন্তু, আদালত তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। তারপর থেকে একাধিক বার অনুব্রতকে আদালতে পেশ করা হলেও জামিনের আবেদন করেননি তাঁর আইনজীবীরা। গোরু পাচার মামলার তদন্তের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যায় সেটাই এখন দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 + 19 =