মনোনয়নের পর স্ক্রুটিনি পর্বে রণক্ষেত্র কোচবিহার, আক্রান্ত বিজেপি প্রতিমন্ত্রী নিশীথের কনভয়

মনোনয়নের পর স্ক্রুটিনি পর্বে রণক্ষেত্র কোচবিহার। দিনহাটার সাহেবগঞ্জে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের সামনে বোমাবাজির অভিযোগ। কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর গাড়ি লক্ষ করে ছোঁড়া হয় তিরও।স্থানীয় বিজেপির নেতাদের অভিযোগ, শনিবার সাহেবগঞ্জে বিজেপিকে স্ক্রুটিনিতে বাধা দেয় তৃণমূল কর্মীরা। ছিঁড়ে দেওয়া হয়ে কাগজপত্র। মারধর করা হয় বিজেপি প্রার্থীদেরকেও।শুধু তাই নয়, ছিঁড়ে দেওয়া হয় মহিলাদের বস্ত্রও।এই খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।তবে বিডিও অফিসের ১০০ মিটারের মধ্যে নিশীথ প্রামাণিককে আটকে দেওয়া হয়। সেখানে দাঁড়িয়েই পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে জানান,’পুলিশ পুরো দলদাস হয়ে গিয়েছে। এখন তৃণমূল কর্মী আর পুলিশের মধ্যে কোনও ফারাক নেই। তৃণমূল বিধায়কের পিছন পিছন ঘোরাই পুলিশের কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উদয়ন গুহর অঙ্গুলিহেলনে চলছে পুলিশ। রাজ্যের মানুষ আগে কোনোদিন পুলিশকে এতটা ব্যর্থ হতে দেখেননি।’
এখানেই শেষ নয় নিশীথের অভিযোগে। তিনি এও জানান, পুলিশের সামনে মহিলা প্রার্থীকে মারধর করা হয়। এরই পাশাপাশি সাহেবগঞ্জের ঘটনা নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে নালিশের হুঁশিযারিও দিতে শোনা যায় কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথকে।পাল্টা তৃণমূলের অভিযোগ, বাহিনী নিয়ে তাণ্ডব চালিয়েছে বিজেপি।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার দিনহাটার ২ নম্বর ব্লকে সাহেবগঞ্জ বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র পরীক্ষার কাজ চলছিল। বিডিও অফিস দখল করে রাখার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপির অভিযোগ, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ বিডিও অফিস দখল করেছিলেন। এই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক।বিডিও অফিসে পৌঁছতেই তাঁর গাড়িতে চলে হামলা।শুরু হয় শাসক বিরোধী গোষ্ঠীর সংঘর্ষও।নিশীথের অভিযোগ, তাঁর কনভয় লক্ষ্য করে হামলা চালায় তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। কনভয়ের অনতিদূরে বোমাবাজিও হয়। এদিকে এই সংঘর্ষ এতটাই ব্যাপক আকার ধারন করে যে,উত্তেজিত জনতাকে সরাতে পুলিশ দু’পক্ষের উপর লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয়। এদিকে বিডিও অফিস চত্বরে মোতায়েন পুলিশকর্মীদের কাছে অভিযোগ জানাতে যান নিশীথ। তখন পুলিশের সঙ্গেও একপ্রস্থ বচসা শুরু হয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর।এই প্রসঙ্গে নিশীথ জানান, ‘বাংলায় ভীতিজনক পরিস্থিতি। রাজ্যে এক অরাজগ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’ সঙ্গে এও জানান,‘ উদয়ন গুহর নেতৃত্বে পুলিশ আর বিধায়ক একসঙ্গে মিলে আমাদের মারছে। আমার কনভয়ে তির ছোড়া হয়েছে। পুলিশের ভূমিকা অত্যন্ত নিন্দনীয়।’
এদিকে পাল্টা তৃণমূলের তরফ থেকে দাবি করা হয়, শান্তিপূর্ণভাবে স্ক্রুটিনি চলছিল। সেখানে নিশীথ প্রামানিক নেতৃত্বে প্রায় ৫০টি মোটর বাইকে করে বিজেপির লোকজন এসে উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি করে। এদিনের এই ঘটনায় স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা বলেন, ‘যা ঘটেছে তা সম্পূর্ণরূপে বিজেপির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। জেলায় বিজেপির প্রচুর গোষ্ঠী রয়েছে তা সব মানুষেরই জানা। এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই। কাউকে আমাদের দলের কর্মীরা মারধর করেননি। বিজেপি বুঝে গিয়েছে যে পঞ্চায়েত ভোটে হারবে, তাই নিজেদের মধ্যে ঝামেলা করে এসব অভিযোগ আমাদের ঘাড়ে ঠেলতে চাইছে।’ পাশাপাশি তৃণমূল নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষের দাবি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + 13 =