যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালেয়র সমাবর্তনে ফের জটিলতা। এবার শুরু হল পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। বিক্ষোভরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় অধ্যাপকদের।
এদিকে, সমাবর্তন নিয়ে জটের মাঝেই রাজভবনের তরফে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্র্বতীকালীন উপাচার্য পদ থেকে শনিবার রাতে সরানো হয় বুদ্ধদেবকে। প্রশ্ন ওঠে, রবিবার কি আদৌ সমাবর্তন হবে? এর মধ্যেই সমাবর্তন যাতে হয়, সে জন্য উপাচার্যকে বিশেষ ক্ষমতা দেয় রাজ্য শিক্ষা দপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, রবিবারের জন্যই এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সেখানে জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালের ১৭ অগস্ট বুদ্ধদেবকে উপাচার্য পদে বসানো হয়েছিল। ২৩ ডিসেম্বর, শনিবার আচমকা সেই ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়। অথচ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য একক ভাবে এ ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। তার পরেই ২৪ ডিসেম্বর সমাবর্তন করানোর জন্য বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয় বুদ্ধদেবকে।
এদিকে, রবিবার সমাবর্তন ঘিরে তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুরের পরিস্থিতি। শনিবার থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন ঘিরে যে জটিলতা শুরু হয়েছে তার বিরোধিতা করে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। কেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা হয়নি তা নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হচ্ছে। পাশাপাশি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রভোট করানোর দাবি তুলেও এদিন স্লোগান দেওয়া হয়েছে। ফেটসু কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখায়। বিক্ষোভ করে এসএফআই-ও । ওপেন এয়ার থিয়েটারে সমাবর্তন অনুষ্ঠান চলছিল। বাইরে চলছিল বিক্ষোভ । আচমকা ভিতরে ঢুকে পড়ে বিক্ষোভরত ছাত্রছাত্রীরা। দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান শুরু আগে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন পড়ুয়াদের একাংশ।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষবার ছাত্রভোট হয়েছে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। রাজ্যপালের অপসারণ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে হাজির হয়েছেন বুদ্ধদেব সাউ। আচার্য-রাজ্যপালের আসনের পাশেই অপসারিত উপাচার্যর আসন। যাদবপুরের সমাবর্তনে আসেননি আচার্য সি ভি আনন্দ বোস। কলকাতায় থাকলেও, সমাবর্তনে যোগ দিলেন না ইউজিসি চেয়ারম্যানও। আইনি জটিলতা এড়াতে পড়ুয়াদের ডিগ্রি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য। সমাবর্তনের আগের দিন, গতকালই অন্তর্র্বতী উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউকে বরখাস্ত করেন আচার্য-রাজ্যপাল। এরপরই বুদ্ধদেব সাউয়ের পৌরোহিত্যেই সমাবর্তনের আয়োজন করার জন্য রেজিস্ট্রারকে চিঠি দেয় রাজ্য সরকার।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অপসারণ ঘিরেও রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত অব্যাহত। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে হাতিয়ার করে রাজ্যপাল ও আচার্য সি ভি আনন্দ বোসের উপাচার্য অপসারণের সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দিয়েছে রাজ্য সরকার।