ধর্ষণ ও মৃত্যুতে প্ররোচনার অভিযোগে ধৃত নেতা সৌমিত্রর প্রচারে, বিতর্ক

নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: আবারও বিতর্কের মুখে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ। সোমবার ইন্দাসে দলীয় কর্মী সমর্থকদের নিয়ে ভোট প্রচার উপলক্ষে একটি মিছিল করতে দেখা যায় বিজেপি প্রার্থীকে। এই মিছিলে প্রথম সারিতে বিজেপি প্রার্থী এবং ইন্দাসের বিধায়কের পাশে হাঁটতে দেখা যায় দলের সম্পাদকের পদ থেকে বহিষ্কার হওয়া সোনামুখীর বিজেপি নেত্রীকে ধর্ষণের ও মৃত্যুতে প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নেতা তরুণ সামন্তকে।
সম্প্রতি সোনামুখীর এক বিজেপি নেত্রীকে দলের বড় পদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি নেতা তরুণ সামন্তের দিকে। চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি নিজের বাড়িতে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করে ওই বিজেপি নেত্রী। বিজেপি নেত্রীর স্বামী সোনামুখী থানায় অভিযোগ করে তাঁর স্ত্রীকে মৃত্যুতে প্ররোচনা দেন, তৎকালীন সময়ে বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক তরুণ সামন্ত। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই বিজেপি নেতাকে গ্রেপ্তারও করা হয়, পরে জামিনে মুক্তি পান ওই বিজেপি নেতা। গ্রেপ্তারের পর জেলা বিজেপির সভাপতি তথা ওন্দা বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক অমরনাথ শাখা জানিয়েছিলেন, রাজ্যের নির্দেশে তরুণ সামন্ত যে পদে ছিলেন, সেই পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এবার লোকসভা নির্বাচন দোরগোড়ায় আসতেই বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে ভোট প্রচার করতে দেখা যায় অভিযুক্ত ওই বিজেপি নেতাকে। তারপরেই নিন্দা ও বিতর্কের ঝড় বিরোধী মহলে। প্রত্যেকেরই প্রশ্ন, কী ভাবে দলেরই এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকে বিজেপি প্রার্থী দলীয় কর্মসূচিতে রাখেন। তবে বিরোধীরা মনে করছেন, সৌমিত্র খাঁ ভোট প্রচারের জন্যই এই নিম্নমানের কাজ করেছেন।
সৌমিত্র খাঁয়ের দাবি, ‘ও তো এখনও দোষী নয় ওর থেকে সে জামিন পেয়েছে। কেউ রাস্তায় হাঁটলে তাঁকে তো আর বাধা দেওয়া যায় না। দলের কোনও পদে নেই কেউ যদি ভারতীয় জনতা পার্টির হয়ে মিছিলে হাঁটে সেটায় আমার কিছু বলার নেই।’ আর এই নিয়ে বিজেপিকে তীব্র কটাক্ষ করেছে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি দিব্যেন্দু ব¨্যােপাধ্যায় বলেন, এই ধরনের লোক ছাড়া ওদের লোক নেই এরাই তো বিজেপির মুখ। বিজেপির যা কালচার সেই কালচার মেনেই ওরা কাজ করে চলেছে।’
অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলা প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা মহিলাদের মা দুর্গা হিসেবে দেখি। আর একজন নারীর সম্মান নষ্ট আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া সেই ধরনের মানুষকে নিয়ে মিছিল মিটিং করা ঠিক নয়।’ এটা যেমন বিজেপি কর্মীদের কাছে ভুল বার্তা যাবে, তেমনই সমাজের কাছেও ভুল বার্তা যাবে বলে জানান তিনি।

এ বিষয়ে তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল বলেন, ‘এটাই বিজেপির আসল চরিত্র, বিষ্ণুপুরের মানুষ বুঝতে পেরেছে আগামী দিন ভোট বাক্সেও বোঝাবে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − fifteen =