বিজেপির থেকে মুখ ফেরাল হিমাচলবাসী

গুজরাতে  ল্যান্ড স্লাইড ভিকট্রি পেলেও পাহাড়ের মাটিতে পা পিছলে গেল বিজেপির।  যদিও পাহাড় আঁকড়ে ধরে রাখার শেষ চেষ্টা চালানো হয় স্যাফ্রন ব্রিগেডের তরফ থেকে। হিমাচলকে হাতের মুঠোয় আনতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি স্বয়ং যান প্রচারে। তাতে চিঁড়ে ভেজেনি। ফলে গুজরাতে যখন ঝড় তুলেছে গেরুয়া শিবির,  হিমাচল কিন্তু ঠিক উল্টো পছথে হেঁটে বেছে নিয়েছে কংগ্রেসকেই। তবে এ ঘটনা নতুন কিছু নয়। গত ৩৭ বছরের ইতিহাস বলছে, একটি দল একটানা দু দফায় ক্ষমতায় থাকতে পারে না হিমাচলে। তারই অ্যাকশন রিপ্লে ২০২২-এও।  আর এই ভাবেই নিজেদের রাজনৈতিক ঐতিহ্য বজায় রাখল হিমাচলবাসী।

বৃহস্পতিবার গণনা শুরু হওয়ার পর টানাপোড়েন চললেও কিছুক্ষণের মধ্যেই ফলাফল মোটামুটিভাবে পরিষ্কার হতে থাকে। বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, হিমাচলের মোট ৬৮ টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪০ টিতে জয়ী হয়েছে কংগ্রেস।অর্থাৎ, সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে পাঁচ বছর বাদে ফের ক্ষমতায় আসতে চলেছে কংগ্রেস।

এখানে বলে রাথখা শ্রেয়,১৯৮৫ সাল থেকে বিধানসভা নির্বাচনের ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাবে, একবার ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস তো পরের বার বিজেপি। এমনকী কংগ্রেসের জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী বিদর্ভ সিং বা বিজেপির জনপ্রিয় মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধূমলও সেই ঐতিহ্যের বদল ঘটাতে পারেনি। মোদি প্রচারে গিয়ে সেই প্রথা বদল করার আবেদন জানিয়েছিলেন তাতেও কাজের কাজ কিছু ল না।

তবে বিজেপির এই হারের পিছনে বেশ কয়েকটা কারণও রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, হিমাচলে শিল্প বলতে তেমন কিছু নেই। তাই সরকারি চাকরিজীবীরা সে রাজ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভোটার। এদিকে এই সরকারি কর্মীরাই দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিলেন, যাতে পুরনো পেনশন স্কিম আবার চালু করা হয়। এই ইস্যুতে বিক্ষোভও প্রদর্শন করেন তাঁরা। কিন্তু, সরকারি কর্মীদের সেই দাবি তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখেনি বিজেপি। আর এই সুযোগ হাত ছাড়া করেনি কংগ্রেস।  কংগ্রেসের তরফ থেকে বারবার এই সরকারি কর্মীদের দাবি মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আর সেই কারণেই কংগ্রেসের প্রতি এই সরকারি কর্মীদের আস্থা বেড়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে বিজেপির অন্দরে দেখা দিয়েছিল অন্তর্কলহ। আর বোঝার ওপর শাকের আঁটি ছিল মূল্যবৃদ্ধি ইস্যু।  একইসঙ্গে বিজেপির আনা ‘অগ্নিবীর’ প্রকল্পও মোটেই পছন্দ হয়নি হিমাচলবাসীর। এর মিলিত প্রভাবে কংগ্রেসর কাছে হার মানতেই হল বিজেপিকে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − sixteen =