‘দিদি, এক মাঘে শীত যায় না। যে খেলা আপনি শুরু করেছেন, মিলিয়ে নেবেন, সেই খেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন আপনিই। আর কিছু দিনের মধ্যেই আপনার দল ভেঙে চৌচির হয়ে যাবে। চ্যালেঞ্জ অ্যাকসেপ্ট করলাম। কংগ্রেসকর্মীরা দুঃখ পাবেন না।’ সোমবার বায়রন বিশ্বাসের কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ঘটনায় রীতিমতো এই ভাষাতেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভপতি অধীর রঞ্জন। একইসঙ্গে এও বলেন, ‘মীরজাফরের থেকেও মানুষের সঙ্গে বড় বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন বায়রন।’ তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, বায়রনকে ভয় দেখিয়েই দলে টেনেছে তৃণমূল। নির্বাচনে জেতার পর স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের এই একজন প্রতিনিধিকে হয় ভয় দেখানো নয়ত প্রলোভন দেখানো হয়েছে বলেও জানান তিনি। এরই রেশ ধরে অধীর এও বলেন, ‘তৃণমূল হয় প্রথমে টাকার অফার করে। হয় গাজর দেখায় নয়ত ডান্ডা দেখায়। যখন তৃণমূল বাইরনকে গাজর দেখিয়েছিল তখন বাইরন বলেছিল আমিই আপনাদের কিনে নেব। এরপর তৃণমূলের মনে হল ওকে ভয় দেখাও। ওর কাছে হুমকি ফোন যাচ্ছিল। সেই কারণেই ও যোগদান করেছে। এর মধ্যে কোনও অনিয়ম নেই।’
এরই পাশাপাশি শাসকদল তৃণমূলকে টার্গেট করে তাঁর মন্তব্য, ‘বায়রন সম্পর্কে আমার আগেও কোনও খারাপ ধারণা ছিল না, এখনও নেই। কিন্তু, দিদি যে দল ভাঙানোর খেলায় সিদ্ধহস্ত, তা সারা ভারত জানে।’
যদিও বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্যর মত ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘বাইরন চলে যাবে তার আশঙ্কা ছিলই। স্পিকারকেও সেটা বলেওছিল। তবে এই ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা অন্যায়। তৃণমূল কংগ্রেসকে দাম দিতে হবে। ওকে প্রার্থী করা ভুল হয়েছে। কিন্তু তখন কিছু বোঝা যায়নি। তবে সমগ্র ঘটনায় জোটের জন্য শঙ্কা তো তৈরি হল।’
প্রসঙ্গত, বঙ্গ বিধানসভায় এই একটাই মাত্র বিধায়ক ছিল কংগ্রেসের। সোমবার সেই বায়রনই যোগ দেন তৃণমূলে। অথচ, একসময় এই বায়রনকেই প্রদেশ কংগ্রেসের ‘আয়রন’ বলে উল্লেখ করেছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী।
অধীরের এহেন মন্তব্যের পাল্টা উত্তর দিতে ছাড়েননি অভিষেকও। ঘাটালে বায়রনকে পাশে বসিয়েই অভিষেক বলেন, ‘অধীর বাবু খেলাটা কী? আমার দল ভাঙার হলে আমি মুর্শিদাবাদে গিয়ে ভাঙতাম। কাল বোতাম টিপলে চার কংগ্রেস সাংসদ আসবে। শুধু বাংলার নয়, ভিন রাজ্য আছে। উনি চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন। এক মাসে দেখিয়ে দেব। আমাকে দল অনুমোদন দিলে আমি বহরমপুরে দাঁড়িয়ে যাব। দল আমাকে শুধু অনুমোদন দিক।’