প্রধানমন্ত্রী মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেস নির্বাচন কমিশনে গেলেও নীরব ভূমিকায় কমিশন

২০২৩ কর্ণাটক বিধানসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেসের তরফ থেকে তোলা হল গুরুতর অভিযোগ। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। তবে অভিযোগ জানিয়েও কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে এমনটাও দাবি করা হচ্ছে কংগ্রেসের তরফ থেকে। আর এখানেই প্রশ্ন উঠে গেছে, তাহলে কী সবকিছুর ঊর্ধ্বে চলে গেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। যেখানে তাঁর বিরুদ্ধে নালিশ জানিয়েও কোনও লাভ হবে না!
কংগ্রেসের অভিযোগ, বেল্লারির সভায় প্রধানমন্ত্রী সরাসরি অভিযোগ করেন, ‘কংগ্রেস তলে তলে জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখে। তাই উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বললেই তাদের পেট ব্যথা করে।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ সহ তাঁর ভাষণের বিস্তারিত কংগ্রেস গত শুক্রবার কমিশনকে জানিয়েছে। দাবি জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু ৭২ ঘণ্টা পেরোতে চললেও কমিশন উচ্চবাচ্য করেনি। অথচ বিজেপির অভিযোগ পাওয়া মাত্র কমিশন তাদের বক্তব্যের ব্যাখ্যা তলব করেছে। কংগ্রেস কর্নাটকের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির রেট কার্ড প্রকাশ করেছে। সরকারের কোন কাজের জন্য কত টাকা ঘুষ গুণতে হয় তার তালিকা প্রকাশ করে তারা। এরপরই বিজেপি কমিশনের কাছে অভিযোগ করে কংগ্রেসের কাছে জানতে চাওয়া হোক, তারা কোথা থেকে এই হিসাব সংগ্রহ করেছে। এই অভিযোগে ভিত্তিহীন। বিজেপির শনিবার সকালে করা অভিযোগের ব্যাপারে বিকালেই রিপোর্ট তলব করে কমিশন।
কমিশনের বিরুদ্ধে এই ব্যাপারে দ্বিচারিতার অভিযোগ তুলেছেন দলত্যাগী কংগ্রেসি আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি বর্তমানে সমাজবাদী পার্টির রাজ্যসভার সাংসদ। রবিবার কমিশনকে লেখা চিঠিতে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কমিশন চুপ। একইসঙ্গে তিনি এ প্রশ্নও তোলেন, তাঁর প্রশ্ন কমিশন কি প্রধানমন্ত্রীর অফিসকে ভয় পাচ্ছে তা নিয়েও। প্রসঙ্গত, সিব্বল কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ছিলেন। রাহুল গান্ধির সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় তিনি গত বছর কংগ্রেস ছেড়ে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন।
প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা আগেও একাধিকবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বিধি ভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে কমিশনে ফাটল ধরেছিল। তিন কমিশনারের একজন প্রধানমন্ত্রী বিধি ভেঙেছেন বলে নোট দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সহ বাকি দুই কমিশনার প্রধানমন্ত্রীকে নির্দোষ ঘোষণা করেন। সেই ঘটনা নিয়ে জল অনেক দূর গড়ায়। দেশের সুশীল সমাজ ও প্রাক্তন আমলারা রাষ্ট্রপতির কাছে কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান, যার নজির খুব কমই আছে। মোদির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চাওয়া সেই কমিশনারকেই ভোটের পর বিজেপির চাপের মুখে সরে যেতে হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − fourteen =