নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: ঘুঘুর বাসা বিএলআরও অফিস! সেই অফিসে টাকা ছাড়া পাতা নড়ে না বলে অভিযোগ তুলে বিএলআরও অফিসে কর্মী আধিকারিকদের রীতিমতো তালাবন্দি করে বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূলের নেতা কর্মী ও জনপ্রতিনিধিরা। বাঁকুড়ার ইন্দপুর ব্লকের এই ঘটনা নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।
ভূমি সংস্কার দপ্তরের বিরুদ্ধে বারেবারেই দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান খোদ মুখ্যমন্ত্রীও একবার ভূমি সংস্কার দপ্তরকে ঘুঘুর বাসা বলে উল্লেখ করলেও, তাতে হাল যে মোটেও ফেরেনি বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার খোদ শাসকদলের ইন্দপুর ব্লকের ব্লক সভাপতি রেজাউল খানের নেতৃত্বে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান, সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি, সহ-সভাপতি সহ তৃণমূলের নেতা কর্মীরা ইন্দপুর ব্লকের বিএলআরও অফিসে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। খবর পেয়ে ইন্দপুরের বিডিও বিএলআরও অফিসে গেলে তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ও কর্মীরা।
তৃণমূলের দাবি, এই বিএলআরও অফিসের আধিকারিক ও কর্মীরা আপাদমস্তক দুর্নীতিতে ডুবে রয়েছেন। টাকা না দিলে এই দপতরে কোনও কাজ হয় না। টাকার বিনিময়ে অবলীলায় সরকারি জমি অন্যের নামে রেকর্ড হয়ে যায়। টাকা না দিতে পারায় সামান্য ইকনমিক উইকার গ্রুপের শংসাপত্র পেতেও পড়ুয়াদের মাসের পর মাস বিএলআরও অফিস থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারী তৃণমূলের দাবি, চুরি করবে বিএলআরও অফিস আর চোর তকমা পেতে হবে তৃণমূলকে, তা মেনে নেওয়া হবে না। প্রয়োজনে আগামী দিনে আরও বড় আন্দোলন গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
ইন্দপুরের বিএলআরও তৃণমূলের তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিডিওর দাবি বিএলআরও পৃথক দপ্তর। তা সত্ত্বেও অভিযোগগুলি লিখিত ভাবে পেলে তিনি পরবর্তী পদক্ষেপ করবেন। বিজেপির দাবি, বিএলআরও অফিসের দুর্নীতি নিয়ে বারেবারে সরব হয়েছে তারা। সেই অভিযোগই আজ প্রমাণিত হল। বারেবারে এতদিন পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূলের এক গোষ্ঠী ক্ষমতায় ছিল। আজ অন্য গোষ্ঠী ক্ষমতায় এসেছে। নিজেদের প্রমাণ করতেই আজ এভাবে বিএলআরও অফিসে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভে সামিল হয়েছে তৃণমূল।