কুস্তিগিরদের পাশে মুখ্যমন্ত্রী, কেন্দ্রকে বিঁধে জবাব চাইলেন হেনস্থার

‘ক্যায়া নন্দলাল, চুপ কিউ হ্যায় আপ লোগ।’ কুস্তিগীর পাশে দাঁড়িয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের দিকে এমনই প্রশ্ন ছুড়ে দিতে দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। শুধু তাই নয়, প্রতিবাদী কুস্তিগীরদের সমর্থনে গোষ্ঠপাল মূর্তির পাদদেশ থেকে গান্ধীমূর্তির পাদদেশ পর্যন্ত মোমবাতি মিছিলে পা মিলিয়ে কেন্দ্রকে এ বার্তাও দিলেন যে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝাঁঝ বাড়াচ্ছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। এদিন গোষ্ঠপালের মূর্তির পাদদেশ থেকে মোমবাতি মিছিল শুরুর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ফের একদফা আক্রমণের সুর চড়ালেন মমতা। কুস্তিগীরদের সঙ্গে যে ধরণের ব্যবহার করা হচ্ছে সেই প্রসঙ্গ টেনে বললেন, ‘আমি দেশের নাগরিক হিসেবে লজ্জিত। ওয়ার্ল্ড রেসলার্স অর্গানাইজ়েশন বলছে, এরকম চলতে থাকলে ভারতের লাইসেন্স বাতিল করে দেবে।’ এদিনের এই মোমবাতি মিছিলে অংশ নিতে দেখা যায় রাজ্যের ক্রীড়াজগতের বিশিষ্টজনেদেরও।
এদিন গোষ্ঠপালের মূর্তির পাদদেশ থেকে বিজেপিকে বিদ্ধ করে মুখ্যমন্ত্রী এও জানান, ‘প্রতিটি খেলার মাথায় কোনও না কোনও নেতাকে জোর করে চাপিয়ে দিচ্ছে বিজেপি। যাঁরা উপযুক্ত খেলোয়াড়, তাঁদের খেলতেও দিচ্ছে না। আমি চাই গোটা দেশের যত ক্রীড়াবিদ রয়েছেন, যত শুভাকাঙ্খী রয়েছেন, আপনারা সকলে এর প্রতিবাদ করুন।’ এদিকে ওয়ার্ল্ড রেস্টলার্স অর্গানাইজ়েশন ভারতের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়ার যে আশঙ্কার কথাও পৌঁছেছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও।এই প্রসঙ্গ বিজেপিকে কটা৭ের সুরে বিঁধে দেন মমতা। বলেন, ‘একে তো হয় না। আর যখন হয়, তখন আপনারা খালি ছবি তোলেন। যেন বিজেপির দুধ খেয়ে এরা খেলোয়াড় হয়েছেন। আর যখন এরা রাস্তায় থাকে, তখন পুলিশ দিয়ে অত্যাচার চালানো হয়। আমি তো পুলিশের দোষ দেখছি না, আমি দোষ দেখছি প্রশাসনের।‘ কেন্দ্রকে একহাত নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, খেলোয়াড়দের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘আপনারা লড়াই ছাড়বেন না। এটা জীবনের লড়াই, সত্যের জন্য লড়াই।’মমতার বক্তব্য, কাউকে না কাউকে তো বিড়ালের গলায় ঘণ্টা বাঁধতে হবে। কাউকে না কাউকে তো রাস্তায় নামতে হবে। আন্দোলনের সুর আরও চড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বললেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত না গ্রেফতার হবে, আইন কিন্তু ছেড়ে কথা বলবে না। এই লড়াই আমাদের স্বাধীনতার লড়াই। যতক্ষণ কুস্তিগীররা স্বাধীনতা না পাবে, ততদিন লড়াই চলবে। শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই ছাড়ব না।’
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এদিন হুঁশিয়ারির সুরে এও মনে করিয়ে দেন,, ‘খেলোয়াড়দের কমিউনিটি ছোট নয়। এটাও একটা বড় কমিউনিটি, এটা বুঝতে হবে। কুস্তিগীররা যাঁরা লড়াই করছেন দীর্ঘদিন ধরে, তাঁদের সকলকে আমি অভিনন্দন জানাচ্ছি। অনেক কষ্ট সহ্য করে, দেশের জন্য লড়াই করতে গিয়ে তাঁদের অনেক ঘাম ঝড়েছে। অনেক পরিশ্রম করেছে। অনেকে হয়ত ঠিকঠাক খেতেও পায় না।’ একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সংযোজন, ‘এঁরা খুব গরিব ঘর থেকে আসেন। তাঁদের মধ্যে যে জেদ থাকে, তা সহজে পাওয়া যায় না। জেদটা মাটির মধ্যেই থাকে।‘

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − eleven =