একাদশে ভর্তির নিয়ম শিথিল, অঙ্কে ৩৫ শতাংশ পেলেই বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার সুযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা: শুক্রবার ফলপ্রকাশ হয়েছে মাধ্যমিকের। এবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির পালা। এবার ভর্তির ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম শিথিল করল শিক্ষাদপ্তর। বলা হয়েছে, মাধ্যমিকে ৩৫ শতাংশ নম্বর পেলেই একাদশে ভর্তি হওয়া যাবে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞান শাখাতেও ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবে পড়ুয়ারা।

শুক্রবার চলতি বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর রাতেই একাদশে ভর্তি নিয়ে নতুন বিজ্ঞপ্তি জারি করল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। পাশাপাশি স্কুলগুলিতে বাড়ানো হয়েছে আসন সংখ্যাও।


বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে ভরতির জন্য মাধ্যমিকে ৩৫ শতাংশ নম্বরই যথেষ্ট। যে কোনও শাখায় ভর্তি হওয়া যাবে এই নম্বরেই। বিজ্ঞান বিভাগ অর্থাৎ অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা, জীববিদ্যা, রসায়নের মতো বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশোনা করতে চাইলে আবেদন করতে পারে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা।
পিওর সায়েন্সের ক্ষেত্রে অঙ্কে ৩৫ শতাংশ পেতেই হবে। আবার বায়ো সায়েন্স নিয়ে একাদশে ভর্তি হতে চাইলে জীবনবিজ্ঞানে ৩৫ শতাংশ নম্বর দরকার। উচ্চমাধ্যমিকে ভূগোল নিতে চাইলে ভূগোলে ৩৫ শতাংশ নম্বর দরকার।কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চাইলে অঙ্ক, ভৌতবিজ্ঞানে দরকার এই নম্বর। আরও বেশি পড়ুয়াকে পরবর্তী পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে স্কুলে একাদশ শ্রেণির আসন সংখ্যা বাড়ানো হল। ২৭৫ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করা হয়েছে বলে নয়া বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এতদিন স্কুলগুলিতে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মোটামোটি ২৭৫ টি আসন ছিল বিভিন্ন বিভাগে। এবার তা আরও ১২৫ টি আসন বাড়ানো হল। এতে খুশি পড়ুয়ারা। তাদের চিন্তা অনেকাংশে কমল বলে জানাচ্ছে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণরা।
প্রশ্ন উঠেছে, এক ধাক্কায় আসন ২৭৫ থেকে বাড়িয়ে ৪০০ করা হল। এই পড়ুয়ার জন্য যথাযথ শিক্ষার কাঠামো স্কুলগুলিতে আছে তো? বহু গ্রামীণ স্কুলেই যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই। শহরতলির একাধিক স্কুলেও এখন প্যারাটিচারের পাশাপাশি কনট্র্যাকচুয়াল শিক্ষক-শিক্ষিকারা পড়ান। অন্য দিকে, প্রশ্ন উঠেছে ৩৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা একজন ছাত্র বা ছাত্রী করতে পারবেন তো?
সংসদের ব্যাখ্যা, বিজ্ঞান নিয়ে পড়ার লোক কমে যাচ্ছে। তাই এই নির্দেশিকা। সংসদ সভাপতি বলেন, ‘বিজ্ঞানে পড়াশোনা নিয়ে আরও উৎসাহ দিতে চাই। গত পাঁচ ছ’ বছর ধরে দেখা যাচ্ছে বিজ্ঞানে পড়ার প্রবণতা কমছে। যদি ৮ লক্ষ পড়ুয়া থাকে যারা উচ্চ মাধ্যমিকে বসেছে, সেখানে বিজ্ঞানের পড়ুয়া ৮০ হাজারের মতো। এটা বাঞ্ছনীয় নয়।’
একসঙ্গে স্কুলগুলিতে আসন সংখ্যা এক ধাক্কায় বাড়ানো প্রসঙ্গে সংসদের তরফে বলা হয়েছে তবে, সংসদের ব্যাখ্যা গতবার অনেক স্কুলের আবেদনে ভর্তির সংখ্যা বাড়াতে হয়েছিল। তাই এবার এই নির্দেশিকাই জারি করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে সংসদ সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমাদের এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১২ লক্ষ ছিল। তার মধ্যে ৮৬ শতাংশ পাশ করেছে। যারা পাশ করেছে তার মধ্যে আমরা যদি ধরে নিই বেশির ভাগই পড়াশোনা এগিয়ে নিয়ে যাবে, অন্তত আমরা তো সেটাই চাই। সেক্ষেত্রে আসনের ঊর্ধ্বসীমা ২৭৫ রাখলে মুশকিল। এবার আমরা একেবারে সকলের জন্যই সংখ্যা বাড়িয়ে দিয়েছি। বেশির ভাগ পড়ুয়াকেই উচ্চশিক্ষায় সুযোগ দিতে রাজ্য সরকার। সেটা সরকারি নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − seven =