বিষ্ণুপুর: অবশেষে মল্ল রাজাদের অমূল্য কীর্তি ‘গুমগড়ে’র সামনে বেআইনি নির্মাণ ভেঙে দিল বিষ্ণুপুর পুরসভা। ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই পুরসভার তরফে শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার সংশ্লিষ্ট ওই বেসরকারি লজ মালিককে ১৫ দিনের মধ্যে ওই বেআইনি নির্মাণ কাজ ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তা না ভাঙায় এবার পুরসভাই সেই কাজ শুরু করল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে পুর কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ওই কাজ শুরু হয়েছে।
বিষ্ণুপুর পুরসভা সূত্রে খবর, পুরসভাকে ‘না জানিয়ে’ শহরের ‘গুমগড়’ এলাকায় জনৈক অসীম সরকার নামে এক ব্যক্তি একটি লজ তৈরি করেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। এই অবস্থায় তিনবার পুর আইন ইউএস ২১৮ অনুযায়ী নোটিস দেওয়া হয়। ওই গুমগড় এলাকাতেই জোড় বাংলো, শ্যামরায় মন্দির সহ একাধিক প্রাচীন স্থাপত্য রয়েছে। এর আগে পুরাতত্ত্ব বিভাগের তরফেও এই এলাকায় ওই নির্মাণকাজ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কাজ তো হয়নি উল্টে সরকারি সাইনবোর্ড ঢেকে নিজেদের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন ওই লজ মালিক। অবশেষে পুরসভার নির্দেশ না মানায় ওই বেআইনি নির্মাণকাজ ভাঙার কাজ শুরু হল।
তবে শহরবাসীর একাংশও এই নির্মাণ কাজ ভেঙে ফেলার বিরোধিতা করেছেন। শহরবাসী অর্পিতা নাগ বলেন, ঠিক কি কারণে ভেঙে ফেলা হচ্ছে জানি না! তবে এক দিনে তো ওই বাড়ি তৈরি হয়নি। পুরসভার তরফে আগেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। একই সঙ্গে ‘হেরিটেজ’ তকমা পাওয়া মন্দিরগুলির আশে পাশে আরো বাড়ি আছে সেগুলিরও ক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল বলে তিনি মনে করছেন বলে জানান।
পুরসভার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের বিরোধী দলও। বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সহ সভাপতি দেবব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা দলীয়ভাবে যেকোনও বেআইনি কাজের বিরোধী। যিনি ওই লজ তৈরি করছিলেন তখন পুরসভার এই দায়িত্ববোধ কোথায় ছিল? ঠিক জায়গায় এই কাটমানি পৌঁছয়নি বলেই এই অবস্থা বলে তিনি দাবি করেন।
বিষ্ণুপুর পুরসভার পুরপ্রধান গৌতম গোস্বামীকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ এ তিনবার বাড়ি মালিককে নোটিস করা হয়েছিল, তিনি কর্ণপাত করেননি। এমনকী তাঁর বাড়ি তৈরির কোনও বৈধ কাগজপত্রও নেই। এই অবস্থায় পুরবোর্ডের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে ওই বেআইনি নির্মাণ ভাঙা হল বলে তিনি জানান।