কলকাতা: সিআইডি-র বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে সিবিআই-কে চিঠি দিলেন সারদা-কাণ্ডে জেলবন্দি দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের মা। তাঁর দাবি, শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তীর নামে মিথ্যে বয়ান দেওয়ার জন্য দেবযানীর উপর চাপ তৈরি করছে সিআইডি। দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের এই অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করল সিআইডি। তাদের দাবি, ভিত্তিহীন অভিযোগ করছেন দেবযানী।
বুধবার সিবিআইকে একটি চিঠিতে দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, গত ২৩ অগাস্ট সারদাকাণ্ডে জেরা করার নামে জেলে যান অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় নামে এক সিআইডি আধিকারিক। সারদাকাণ্ড নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করার পরই দেবযানীকে তিনি বলেন, তাঁকে শুভেন্দু অধিকারী ও সুজন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে রাজসাক্ষী হতে হবে। বলতে হবে সুজন ও শুভেন্দু ২ জনই সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ৬ কোটি টাকা করে নিয়েছেন। আর সেই টাকার লেনদেন হয়েছে তাঁর সামনে। সিআইডি আধিকারিকের এই প্রস্তাবে রাজি হননি দেবযানী। তখন তাঁকে ওই সিআইডি আধিকারিক হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কথা না শুনলে ৯টি ভুয়ো মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে তাঁকে। চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, সুজন চক্রবর্তী বা শুভেন্দু অধিকারীকে কখনও সামনাসামনি দেখেননি দেবযানী।
স্বাভাবিকভাবে সেই চিঠিকে কেন্দ্র করে ফের তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিআইডি।
ইতিপূর্বে সুদীপ্ত সেনের লেখা একটি চিঠি নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর। যেখানে শুভেন্দু অধিকারী, সুজন চক্রবর্তীরা টাকা নিয়েছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই চিঠিকে হাতিয়ার করে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে সরব হয়েছিল তৃণমূল। তাঁকে গ্রেপ্তারির দাবিতে সরব হয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। এবার পালটা শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের চিঠি হাতিয়ার করে মাঠে নামল বিরোধীরা।
সিআইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে টুইট করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কটাক্ষ, “এ রাজ্যে সিআইডি পিসি-ভাইপোর মাইনে করা দারোয়ানে পরিণত হয়েছে। বন্দ্যোপাধ্যায়দের স্বার্থরক্ষা করতে বিচারাধীন বন্দীকে দিয়ে মিথ্যে বয়ান দিতে বাধ্য করছে সিআইডি।” একইসুর শোনা গিয়েছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর গলাতেও। তাঁর কথায়, “একুশের বিধানসভা ভোটের আগে সুদীপ্ত সেনকে দিয়ে এমন একটা চিঠি লেখানো হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, আমি টাকা নিয়েছি। বিমান বসু টাকা নিয়েছে। লোকে এসব শুনে হাসত। এবারও তাই হবে। রাজ্যের পুলিশের মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে।” এবিষয়ে তৃণমূলের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।
এদিকে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এডিজি সিআইডি রাজশেখরণ। তাঁর কথায়, সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ। দেবযানীদেবী নিজে স্বাক্ষর করে কিছু চেক ইস্যু করেছিলেন। সেটা যাচাই করছিল সিআইডি। ২৩ তারিখ সংশোধনাগারে কর্তৃপক্ষ এবং মহিলা সহকারীর উপস্থিতিতে দেবযানীর বয়ান রেকর্ড করেছিল সিআইডি। এটা একটা তদন্তকারী সংস্থা। প্রমাণের উপর ভিত্তি করে তদন্ত করে।”