গরু পাচার কাণ্ডে তদন্ত শেষের পথে সিআইডি

গরু পাচার কাণ্ডে তদন্তের জাল গোটাতে চলেছে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর। আর এখানেই সামনে আসছে গরু পাচারকারীদের সঙ্গে বিএসএফের যোগাযোগের ঘটনা। পাশাপাশি তাঁরা এও জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় বেশ কয়েকজন শাসকদলের নেতাও। অর্থাৎ, এই গরু পাচার চক্রে তৈরি হয়েছে একটা ত্রিভুজ. যার একটি বাহু পাচারকারীরা হলে অন্য দুটি বিএসএফ এবং স্থানীয় কিছু তৃণমূল নেতা। এবার এই চক্রের সঙ্গে জড়িত সবাইকে দ্রুত চিহ্নিত করে তাঁদের গ্রেপ্তার করার পথে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকেরা।
রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তর সূত্রে খবর, এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৪১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তকারী আধিকারিকরা এও জানতে পেরেছেন, ২০১৯ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর মহকুমার রঘুনাথগঞ্জ সীমান্তে ১৭৩৫টি গরুকে ‘মৃত’ বলে দেখিয়ে বাংলাদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছিল। সেই ঘটনায় কোটি কোটি টাকার মুনাফা লোটেন এক শ্রেণির ব্যবসায়ী। আর এই চোরাচালানে বিএসএফের বেশ কয়েকজন আধিকারিকের প্রত্যক্ষ মদত ও জড়িত থাকার ঘটনাও সামনে এসেছে।
প্রসঙ্গত, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে গরু পাচার মামলায় যেমন দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি একযোগে তদন্ত চালাচ্ছে। এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পৃথক একটি তদন্ত চালাচ্ছে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিও। তদন্তে নেমে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকদের ধারনা, এই ঘটনার তদন্তে নেমে তাঁরা যে তথ্য পেয়েছেন তা হিমশৈলের চূড়ামাত্র। এই প্রসঙ্গে রঘুনাথগঞ্জের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন তাঁরা। পাশাপাশি এও জানান, বিএসএফ-এর হাতে ধরা পড়া গরু হামেশাই পাচার হতো বাংলাদেশে। তার বিনিময়ে এই বাহিনীর আধিকারিকেরা মোটা টাকা পেতেন পাচারকারীদের কাছ থেকে। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে, এই গরু পাচারকাণ্ডে বিএসএফ-এর সঙ্গে পাচারকারীদের অশুভ আঁতাত গড়ে ওঠে।
একইসঙ্গে রাজ্য গোয়েন্দা দপ্তরের আধিকারিকেরা এও জানিয়েছেন যে, জঙ্গিপুর মহকুমায় কর্মরত বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে যোগসাজশ করেই ‘ম্যানেজ’ করে বাংলাদেশে গোরু পাচারের কারবার চালাত এলাকারই গরু ব্যবসায়ীরা। মূলত এর মধ্যে পড়ছেন স্থানীয় খোঁয়াড় মালিকেরাই। যারা বিএসএফের হাতে ধরা পড়া গরুকিছুদিন নিজেদের কাছে খোঁয়াড়ে রেখে দিত। এরপর ওই গরুগুলোকে মৃত বলে দেখিয়ে কাগজপত্র তৈরি করে পাচার করতো বাংলাদেশে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

4 × two =