কলকাতা: বাগুইআটি জোড়া খুন কাণ্ডে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল মূল চক্রী সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে। তার সূত্র ধরেই দিল্লি থেকে কানাহাইয়া কুমারকে গ্রেপ্তার করল সিআইডি। দিল্লির নিম্ন আদালতে পেশ করে ধৃতকে রিমান্ড ট্রানজিশনে কলকাতায় আনার আবেদন জানাবে তদন্তকারীরা।
প্রসঙ্গত, গত ২২ অগস্ট থেকে নিখোঁজ ছিল বাগুইআটির হিন্দু বিদ্যাপীঠের দশম শ্রেণির দুই ছাত্র অতনু দে ও অভিষেক নস্কর। তার ১০-১২ দিন পর বসিরহাট মর্গে পড়ে থাকা দেহর মধ্যে দুই কিশোরের খোঁজ মেলে। ৬ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়।এদিকে এই ঘটনায় নাটকীয়ভাবে বিধাননগর পুলিশ গ্রেপ্তার কের সত্যেন্দ্র চৌধুরীকে।পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অন্য রাজ্যে পালানোর ছক কষেছিলেন সত্যেন্দ্র। হাওড়া স্টেশন চত্বরে ট্রেনের টিকিট কাটার আগে এক আত্মীয়ের সঙ্গে অনলাইনে টাকার একটি লেনদেন করে সত্যেন্দ্র। ওই অনলাইন লেনদেনের সূত্র ধরেই সত্যেন্দ্রের হদিস পায় বিধাননগর পুলিশ। তার পরই তাঁকে পাকড়াও করে সাদা পোশাকের পুলিশ।
সত্যেন্দ্রর থেকেই তার ‘ ক্রাইম পার্টনার’ কানহাইয়া কুমারের সন্ধান পায় সিআইডি। তাকে ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় আনার পরই আদালতে পেশ করা হবে। সূত্রের খবর, ধৃত কানহাইয়া গাড়ির চালক ছিল। টিকিট কাটার আগে এক আত্মীয়ের সঙ্গে অনলাইনে টাকার একটি লেনদেন করেন সত্যেন্দ্র। ওই অনলাইন লেনদেনের সূত্র ধরেই সত্যেন্দ্রের হদিস পায় বিধাননগর পুলিশ। তার পরই তাঁকে পাকড়াও করে সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশের একটি দল।
এদিকে মূলচক্রী সত্যেন্দ্র গ্রেপ্তারের পরও খুনের মোটিভ নিয়ে ধন্দ পুরোপুরি কাটছে না তদন্তকারীদের। মাত্র ৫০ হাজার টাকার জন্য বাগুইআটির দুই কিশোরকে খুন করেছেন বলে জেরার মুখে জানিয়েছিল মূল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র চৌধুরী। অথচ তদন্তে নেমে সিআইডি-র গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, অতনু দে ও অভিষেক নস্কর নামে ওই দুই স্কুলছাত্রকে খুনের জন্য ‘সুপারি কিলার’ বা ভাড়াটে খুনি জোগাড় করা, তাঁদের হোটেলে রেখে পানাহারের ব্যবস্থা, গাড়ি ভাড়া করতেই সত্যেন্দ্রের ৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে গিয়েছে। যদিও সেই টাকার অনেকটাই সে শোধ করেনি। তাই গোয়েন্দাদের দৃঢ় ধারণা, ৫০ হাজার টাকার জন্য খুন, এটা মিথ্যে কথা।
ঠিক কী কারণে দু’টি কিশোরকে তুলে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলা হল? সেই প্রশ্নের উত্তর মিলছে না। গোয়েন্দাদের অনুমান, সত্যেন্দ্র একা নয়, এই খুনের পিছনে আরও কেউ থাকতে পারে, আর তাকে বাঁচাতেই সত্যেন্দ্র মিথ্যে বলছে।
এবার কানাহাইয়া কুমারের গ্রেপ্তারিতে জোড়া খুন কাণ্ডের আরও অনেক তথ্য সামনে আসবে বলেই মনে করেছন তদন্তকারীরা। হয়তো স্পষ্ট হবে খুনের কারণ।