বিপর্যয়ে র্কাযত ধ্বংসস্তূপ উত্তর সিকিমের চুংথাং

গ্যাংটক: পাহাড়ের কোলে ছবির মতো সাজানো গ্রাম। বর্ষায় উচ্ছ্বল ঝরনা। পাখির কলকাকলি। শহুরে ব্যস্ত জীবন থেকে মুক্তি পেতে দেশ বিদেশের পর্যটকরা ছুটে আসতেন সিকিমের চুংথাং-এ। গত কয়েকদিনে প্রকৃকির রোষে কার্যত ভ্রমণ মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বসেছে এই জায়গা।
উত্তর সিকিমের এই গ্রামে বছরভর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা লেগেই থাকত। মূলত এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য চুংথাংকে নিজেদের ভ্রমণ রুটের মধ্যেই রাখতেন সবাই। কয়েকদিনের মহা বিপর্যয়ে একেবারে শ্মশানের চেহারা নিয়েছে গ্রামটি। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু ভেসে গিয়েছে জলে। শুধুমাত্র কয়েকটা ভাঙাচোরা বড় বহুতল এখনও মাথা তুলে দাঁড়িয়ে, তাও সেগুলোর কঙ্কালসার চেহারা।চুংথাংয়ের এক বাসিন্দা বলেন, ‘বিপর্যয়ের সময় আমাদের সবাইকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেনা। শনিবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যখন ফিরলাম, চোখের জল ধরে রাখতে পারিনি। রাস্তা বলতে কিছু নেই আর। কোনওরকমে নদীর উপর দড়ি ফেলে, ঝুলতে ঝুলতে গ্রামে ঢুকেছি। আমি আমার নিজের গ্রামকেই চিনতে পারছি না। চুংথাং যেন একটা বিশাল ধ্বংসপুরীতে পরিণত হয়েছে। এই গ্রামে আর কোনওদিন বাইরে থেকে পর্যটকরা আসবে কিনা জানি না।’
উঁচু পাহাড়ে ঘেরা এই চুংথাং গ্রামের অন্যতম আকর্ষণ ছিল সুন্দরী ঝরনা। এছাড়াও লাচুং গ্রামের কার্পেট বুনন কেন্দ্র, লাচুং গুম্ফা;সবকিছুই ছিল এই চুংথাংয়ে। কিন্তু হ্রদ বিপর্যয়ে সমস্ত কিছু ধুয়ে মুছে গিয়েছে। সিকিম প্রশাসনও জানিয়েছে যে, এখানকার প্রায় ৮০ শতাংশই একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এই গ্রাম আর কোনওদিন আগের রূপে ফিরবে কিনা কেউ জানেন না। আর সেই জন্যই সবার একটাই আশঙ্কা, হয়তো সিকিমের পর্যটন মানচিত্র থেকে চিরতরে হারিয়েই গেল চুংথাং!

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − ten =