গাইঘাটা: শিশু বিক্রির ছক বানচাল ওসির, গ্রেপ্তার সৎ বাবা। একদিকে আর্থিক অনটন অন্যদিকে আগের পক্ষের সন্তান তাই মন থেকে মানতে না পেরেই অবশেষে সদ্যোজাত শিশুকে বিক্রির পরিকল্পনা করেছিল সৎ বাবা। ঘটনার তদন্তে নেমে সমস্ত তথ্য জানতে পারে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযুক্ত সৎ বাবাকে। গাইঘাটার ঢাকুরিয়া এলাকার ঘটনা। পুলিশের জেরার মুখে সঞ্জয় দাস স্বীকার করেছেন, কয়েক মাস আগে ভালোবেসে বিয়ে করেন চাঁদপাড়া এলাকার এক গৃহবধূকে মাসখানেক আগে। পরবর্তীতে জানতে পারেন স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। এই নিয়ে পরিবারে অশান্তিও হয়। গত বৃহস্পতিবার চাঁদপাড়া প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এক মহিলা পুত্র সন্তান প্রসব করেন। গাইঘাটার বিএমওএইচ সুজন গাইন শুক্রবার গাইঘাটা থানায় অভিযোগ করে জানান, ‘ওই শিশু পুত্রের বাবা-মা তাদের পরিচয়পত্র জমা দিচ্ছেন না। নিজেদের সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা শিশুটির জীবন সংশয়ে রয়েছে। তাছাড়া বাবা-মায়ের নথিপত্র না পেলে শিশুটির জন্ম সার্টিফিকেটও দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। অভিযোগ পেয়ে ঘটনা তদন্ত নামে গাইঘাটা থানার পুলিশ। মহিলাকে এবং তার স্বামীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে জেরার ফলে পরবর্তীতে গাইঘাটা থানার ওসি বলাই ঘোষের কাছে ভেঙে পড়ে মহিলার স্বামী এবং মহিলা। সঞ্জয় পুলিশের কাছে জানান, বাচ্চাকে নিতে অস্বীকার করলে দু’জনের সিদ্ধান্তেই এক প্রতিবেশীকে বাচ্চাটি দিয়ে দেবার পরিকল্পনা ছিল যার বিনিময়ে সেই প্রতিবেশী জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে দেবে এমনটাই আশ্বস্ত করেছেন। যার জন্য বাচ্চাটিকে অন্য কাউকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পুলিশ সুয়োমোটো মামলা রুজু করেছে। শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় অভিযুক্ত সঞ্জয় দাসকে। রবিবার তাকে বনগাঁ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জেল হেপাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছেন, শিশু বিক্রির চেষ্টা অভিযোগ পাওয়া গেছে আরো দু’জনের বিরুদ্ধে তাদের নাম রতন বিশ্বাস ও সুমন দাস। পাশাপাশি গাইঘাটা বিএমওএইচ এর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এক মাস আগে বিজলী দাসের সঙ্গে সঞ্জয় দাসের বিয়ে হয়। বিজলী দাসের আগের পক্ষের তিন বছরের একটি মেয়ে রয়েছে আগের পক্ষের স্বামীর কাছে। সদ্যোজাত পুত্র সন্তানকে সঞ্জয় না নেওয়ার কারণে বিক্রির চেষ্টা করছিল। ওই কাজে সুমন এবং রতন তাকে সাহায্য করছিলেন বলেও পুলিশের জেরার মুখে জানিয়েছেন। এই বিষয়ে সঞ্জয় দাস বলেন, ‘ওই বাচ্চা আমার নয়। ফলে আমি তাকে আমার কাছে রাখতে পারব না। সুমন দাস নামে একজন জানিয়েছিল তাকে বাচ্চা দিলে সে আমাকে জমি কিনে বাড়ি করে দেবে তাই সেই কারণেই তাকে বাচ্চা দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। মা ও শিশুটি এখন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মা-শিশু দু’জনেই বর্তমানে সুস্থ অবস্থায় রয়েছেন।