নিজস্ব প্রতিবেদন, বারাসাত: শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ ক্ষেত্রের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোয় যুগান্তকারী পদক্ষেপ করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গ্রামের মানুষের কথা ভেবে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির পরিকাঠামোগত মান উন্নয়নের মধ্য দিয়ে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপনীত করার কাজ শুরু হয়েছে। সেখান থেকে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়াও শুরু হয়েছে। আগামী দিনে এই পরিষেবা আরও বাড়বে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এর ফলে মহকুমা, জেলা ও অন্যান্য সরকারি হাসপাতালে যেমন রোগীর চাপ কমছে তেমনই নিজের এলাকায় বসে কঠিন রোগের চিকিৎসার জন্য বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের পরামর্শ ও চিকিৎসাও মিলছে। এই উন্নত ভাবনা ও পরিষেবার নাম রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছেন ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’। ইতিমধ্যে এই পরিষেবার সুফল পাচ্ছেন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের বহু মানুষ।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী গ্রামীণ ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য নানান প্রকল্প এনে মানুষকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন। এবার ‘স্বাস্থ্য ইঙ্গিত’ এর মাধ্যমে গ্রামের মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রতিটি পঞ্চায়েতের এলাকার আয়তনের ওপর নির্ভর করে একাধিক উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র আগেই তৈরি করা হয়েছিল। এবার সেই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিকে প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ বরাদ্দ করে সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপনীত করা হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক শরদ কুমার দীবেদি জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই জেলায় ৮০-৯০টি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপনীত করা হয়েছে। সেখানে একজন বিশেষ ট্রেনিং প্রাপ্ত নার্সকে কমোনিটি হেলথ্ অফিসার (সিএইচও) হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে। সেখানে নন কনটাজিয়াস ডিজিজ বা সংক্রামিত নয় এমন রোগ যেমন হাইপার টেনশন, সুগার, ক্যান্সার ইত্যাদি রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের দিয়ে চিকিৎসা হচ্ছে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে।
তিনি জানান, গ্রামের মানুষ সবসময় শহরের বড় হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা করতে পারেন না। তাঁরা নিজের এলাকার সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে সিএইচওকে তার সমস্যার কথা বললে তিনি তার সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে যোগাযোগ করে রোগীর সঙ্গে কথা বলিয়ে দিয়ে তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রেসক্রিপশনের ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। রোগ জটিল হলেই তাঁকে হাসপাতালে যোগাযোগের পরামর্শ দিচ্ছেন। এতে রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য শহরের বড় হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না। তাঁর অর্থ, সময় ও যাতায়াতের কষ্ট সবটাই লাঘব হচ্ছে।
জেলাশাসক আরও জানান, আগামী দু’ বছরের মধ্যে জেলার ১৯৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রতিটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রই সুস্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপনীত হবে। সেক্ষেত্রে গ্রামীণ ক্ষেত্রের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবায় যুগান্তকারী পরিবর্তন মিলবে।