কলকাতা : ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য শিল্পী তাপস দাস ক্যানসার আক্রান্ত। চিকিৎসার খরচ কোথা থেকে আসবে, তা নিয়েই চলছিল সমস্যা। শিল্পীরা এগিয়ে এলেও, সকলেই চাইছিলেন সরকারি সাহায্য। জানতে পেরে এগিয়ে এলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর চিকিৎসার যাবতীয় দায়িত্ব নিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশেই বর্ষীয়ান শিল্পীকে এসএসকেএম হাসপাতালের কেবিনে ভর্তি করা হয়েছে।
সাত থেকে আটের দশকের মধ্যে নাড়িয়ে দিয়েছিল গোটা রাজ্য তথা আপামর বাঙালিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ড। গৌতম চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই ব্যান্ডে নতুন ঘরানার গানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল তাপস দাস।একসময় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’। ১৯৭৫ সালে তৈরি হয়ে বাংলার প্রথম রক ব্যান্ড মহীনের ঘোড়াগুলি। ৪৭ বছর পেরিয়ে গিয়েছে, এখনও এই ব্যান্ডের গানগুলির জনপ্রিয়তা একটুও হারায়নি।
গিটার বাজিয়ে এখনও ক্যাম্পাসে গাওয়া হয় গৌতম-তাপসদের তৈরি করা একাধিক গান। টেলিফোন, শহরের উষ্ণতম দিনে, দরিয়া একের পর এক সব বিখ্যাত গান। জানা গিয়েছে, তাপস দাস ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত। কিন্তু ক্যানসারের চিকিৎসা করানোর মতো আর্থিক ক্ষমতা তাঁর ছিল না। ফলে ঠিকমতো চিকিৎসা হচ্ছিল না। মুখ্যমন্ত্রীর কানে সেই খবর যেতেই তিনি হস্তক্ষেপ করেন। মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তাপস দাসের চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করতে বলেন। এরপরেই এসএসকেএম হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাপসবাবুকে ভর্তি করা হয়। ব্যবস্থা করা হয় বিশেষ কেবিনের। নিয়মিত খোঁজ নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে সংগীত মহল।
সোশ্যাল মিডিয়াতে লিখেছেন গায়ক সিধুও। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলা ব্যান্ড যারা ভালোবাস, বাংলা ব্যান্ডের গান শুনতে ভালোবাসো তাদের কাছে ‘মহীনের ঘোড়াগুলি’-র পরিচয় আলাদা করে কিছু বলার নেই। আমাদের যাপনের ওতপ্রোত সঙ্গী মহীনের ঘোড়াগুলি-র অন্যতম পথিকৃৎ তাপসদা বিগত কয়েকমাস যাবৎ দুরারোগ্য ক্যানসারে ভুগছেন। তাঁর চিকিৎসার স্বার্থে প্রয়োজন আর্থিক সাহায্য। সবার কাছে আমাদের বিনম্র অনুরোধ, এই অসময়ে তাপসদা’র পাশে সবাই দাঁড়াই…।” এরপরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপে আপ্লুত বাংলার শিল্পীরা।
রূপম ইসলামও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট দিয়েছিলেন। লেখেন, ‘ গত ১ জানুয়ারি আমি একটি পোস্ট করেছিলাম বাপিদা-র অসুস্থতার ব্যাপারে, যেখানে লিখেছিলাম যে কোনও রাজনৈতিক দলের সাহায্য তিনি নেবেন না। একমাত্র সরকারের সাহায্য গ্রহণ করতে তাঁর আপত্তি থাকবে না, কারণ পশ্চিমবঙ্গ সরকার কোনও একটি রাজনৈতিক দল নয়। সেই পোস্ট দেখে ঠিক তার পরদিনই পশ্চিমবঙ্গ সরকার এগিয়ে এসেছেন, এবং বাপিদা-র চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব তাঁরা নিয়েছেন। এ জন্য তাঁরা আমার কৃতজ্ঞতাভাজন হলেন।’
পাশাপাশি আমরা,’বাংলার শিল্পী সম্প্রদায় আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে এগিয়ে আসতে পেরেছি, সে জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানালাম।’