নিজেকে নাইজারের নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা করলেন অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া চিয়ানি

নাইজারে সেনা অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়ার পর নিজেকে দেশটির নতুন নেতা হিসেবে ঘোষণা করেছেন আবদোরাহমানে চিয়ানি। নাইজারের প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের প্রধান ওমর চিয়ানি নামেই তিনি বেশি পরিচিত। গত বুধবার তাঁর নেতৃত্বাধীন গার্ডের ইউনিট দেশটির গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মহম্মদ বাজোমকে বন্দি করে। বাজোম ২০২১ সালে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাজোম এখন সুস্থ রয়েছেন এবং তিনি গার্ডসের হাতে বন্দি বলে ধারণা করা হচ্ছে। এই অঞ্চলে ইসলামপন্থী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পশ্চিমা দেশগুলো তাকে গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে বিবেচনা করত। এই অবস্থা নিয়ে ফ্রান্স বলছে, তারা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করা কোনও নেতাকে স্বীকৃতি দেয় না। দেশটি শুধুমাত্র বাজোমকেই নাইজারের রাষ্ট্রীয় প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেবে। আফ্রিকান ইউনিয়ন, পশ্চিম আফ্রিকান আঞ্চলিক ব্লক, ইইউ ও রাষ্ট্রসংঘ-সহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো এই অভ্যুত্থানের নিন্দা জানিয়েছে। তবে, রাশিয়ার ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনারের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন এই অভ্যুত্থানের প্রশংসা করেছেন এবং এটিকে একটি বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন। ৬২ বছর বয়সি জেনারেল চিয়ানি ২০১১ সাল থেকে প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ডের দায়িত্বে রয়েছেন। ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট তাকে জেনারেল পদে পদোন্নতি দেন। ২০১৫ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জেনারেল চিয়ানি। এই অভিযোগ অস্বীকার করতে তিনি আদালতে হাজির হয়েছিলেন। টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া এক ভাষণে জেনারেল চিয়ানি বলেন, নিরাপত্তাহীনতা, অর্থনৈতিক দুর্দশা ও দুর্নীতি-সহ নাইজারের বিভিন্ন সমস্যার কারণে জান্তা দায়িত্ব নিয়েছে। নাইজারের বৈশ্বিক মিত্রদের উদ্দেশে তিনি বলেন, জান্তা সব আন্তর্জাতিক অঙ্গীকারের পাশাপাশি মানবাধিকারকে সম্মান করবে। ক্ষমতাচ্যুত সরকারের যারা বিদেশি দূতাবাসে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে জান্তা। জান্তা বলছে যে, এই ধরনের যেকোনো প্রচেষ্টা রক্তপাতের দিকে ধাবিত করবে, যা এখন পর্যন্ত এড়ানো হয়েছে। নাইজারের রাজধানীতে বাজার ও দোকানপাট খোলার সঙ্গে জীবনযাত্রা অনেকাংশে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে। তবে সরকারি কর্মচারীদের বাড়িতে ফিরে যেতে বলা হয়েছে। অভ্যুত্থান নিয়ে নাইজারের জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, দেশে নিরাপত্তাহীনতা এতটা তীব্র ছিল না যে, একটি অভ্যুত্থানকে সমর্থন করা যায়। আবার অনেকে জান্তাকে সমর্থন করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 18 =