নারী ক্ষমতায়নের জ্বলন্ত প্রমাণ চন্দ্রযান -৩, জানালেন প্রধানমন্ত্রী

চাঁদের দক্ষিণমেরুতে চন্দ্রযান সফলভাবে অবতরণ করিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করছে ভারত। এইজন্য আগেই ইসরোর বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বিদেশ সফর থেকে ফেরার পরেই ইসরোর প্রধানকে ফের অভিবাদন জানান প্রধানমন্ত্রী। রবিবার তাঁর ১০৪তম ‘মন কী বাত’-এও প্রধানমন্ত্রী গলায় ছিল চন্দ্রযান অবতরণ করার সাফল্যের কথা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসবে চন্দ্রযান-৩ র সাফল্য আমাদের উদযাপনকে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। এই সাফল্য এতটাই বড় যে যতই আলোচনা করা হোক, তা কম বলেই মনে হয়।’ ‘মিশন চন্দ্রযান’-কে নতুন ভারতের চেতনার প্রতীক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী এই সাফল্যের জন্য এদিন কুর্নিশ জানান নারীশক্তিকেও।

‘মন কি বাত’-এর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসরোর এই মিশন ভারতের নারী ক্ষমতায়নের জলজ্যান্ত প্রমাণ। আমি লালকেল্লা থেকে দাঁড়িয়ে বলেছিলাম যে দেশকে শক্তিশালী করার জন্য মহিলা নির্ভর উন্নয়নকে আরও মজবুত করতে হবে। মহিলাদের ক্ষমতাই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। চন্দ্রযান মিশন তারই প্রমাণ। এই মিশনে বহু মহিলা বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়াররা সরাসরি যুক্ত ছিলেন। ভারতের মেয়েরা এখন মহাকাশকেও চ্যালেঞ্জ করছে। দেশের মেয়েরা যখন এত ‘উচ্চাভিলাষী’ তখন সেই দেশের উন্নতি কেউ আটকাতে পারবে না। তাঁদের জন্য আমরা এই সাফল্য পেয়েছি।’

এরসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই সাফল্যের জন্য আমি ইসরোর সমস্ত বিজ্ঞানীদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁদের কঠোর পরিশ্রমেই এই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। চন্দ্রযান মিশন নতুন ভারতের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই নতুন ভারত যেকোনও পরিস্থিতিতে জয়লাভ করতে জানে।’

শুধুমাত্র চন্দ্রায়ন নিয়ে নয়, এদিন জি-২০-র সাফল্যর কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী মাসে অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে হতে চলেছে জি-২০ বৈঠক। আগামী ৮ থেকে ১০ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে জি-২০ সামিট হতে চলেছে। এই বছর জি-২০-র সভাপতিত্বের দায়িত্ব পেয়েছে ভারত। এর জন্যও ভারত প্রস্তুত বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এই বৈঠকে প্রায় ৪০টি দেশের প্রধান এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ আধিকারিকরা থাকবেন। এছাড়াও বিভিন্ন দেশের নেতা এবং আধিকারিক, আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রধানদেরকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বৈঠকে। জি-২০ সম্মেলনের ইতিহাসে এটাই হবে সবচেয়ে বড় অংশগ্রহণ। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এও জানান, ‘সেপ্টেম্বর মাস ভারত এক অপার সম্ভাবনার সাক্ষী হতে চলেছে। আমাদের জি-২০-র সভাপতিত্ব হল দেশের নাগরিকের সভাপতিত্ব। জনগণের অংশগ্রহণই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ।’ এইসঙ্গে চিনে বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গেমসে ভারত যে সাফল্য তাকেও একটি গৌরব বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি গেমস ২০২৩-র এর সমস্ত পদকজয়ীদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

এদিনের অনষ্ঠান থেকে দেশবাসী সকলকে রাখি উৎসবের জন্য আগাম অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সঙ্গে এও জানান, এবারের স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে  ১০ কোটিরও বেশি মানুষ জাতীয় পতাকা নিয়ে সেলফি পোস্ট করেছেন। দেশজুড়ে দেড় লক্ষেরও বেশি পোস্ট অফিস থেকে দেড় কোটিরও বেশি জাতীয় পতাকা বিক্রি হয়েছে।

এদিকে আগামী ৩১ অগাস্ট বিশ্ব সংস্কৃত দিবস। সেই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার অনেক সংস্কৃত ভাষায় চিঠি পেয়েছেন বলেও জানান। এরই রেশ ধরে তিনি এও বলেন, ‘আমরা সবাই জানি সংস্কৃত বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন ভাষা। একাধিক আধুনিক ভাষার উৎপত্তিও হয়েছে সংস্কৃত থেকে। সংস্কৃত তার প্রাচীনতার পাশাপাশি বৈজ্ঞানিক ভিত্তি ও ব্য়াকরণের জন্যও পরিচিত। সম্প্রতি সংস্কৃত ভাষার প্রচারের জন্য একাধিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী ৩১ অগস্ট বিশ্ব সংস্কৃত দিবসে আমি সকলকে অভিনন্দন জানাতে চাই।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − fourteen =