‘প্রাণে মারার চেষ্টা হয়েছিল। রাজবংশী ছেলে বলে প্রতিশোধ?’ পঞ্চায়েত আর এরপর ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে শনিবারের ঘটনা নিয়ে উত্তরবঙ্গের মানুষদের এই ভাবেই আবেগ উসকে দিতে দেখা গেল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিককে। এই প্রসঙ্গে এও বলেন, ‘চেষ্টা করে উত্তরবঙ্গের মানুষের মন, সমর্থন পায়নি তৃণমূল। রাজবংশীদের পাশে নেওয়ার চেষ্টা, দার্জিলিংয়ের গোর্খাদের সমর্থন আদায়, আলিপুরদুয়ারে আদিবাসীদের পাশে নেওয়ার চেষ্টা করেও প্রত্যাখত হয়েছে। উত্তরবঙ্গ থেকে রাজবংশী ছেলে হিসেবে প্রথম স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রী হয়েছি বলেই কি প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা? দলের নেতাদের উপর কোনও বিশ্বাস নেই তৃণমূলের।‘
শুধু তাই নয়, এই ঘটনায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলার পাশাপাশি পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন নিশীথ।রবিবার এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রীয় প্রতিমন্ত্রী এও জানান, ‘তৃণমূলের গুন্ডাবাহিনী আমাদের বাধা দেয়নি।পুলিশ প্রশাসন ব্যারিকেড করে আমাদের বাধা দিয়েছে। রাস্তার মাঝাখানে পুলিশ ব্যারিকেড করে আমার পথ আটকায়। তারপরই তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা পাথর ছোড়ে, বোমা মারে এমনকী গুলিও চালানো হয়। এই ঘটনা চলতে থাকলে বাংলার মানুষ আতঙ্কিত হবে।’ প্রসঙ্গত, শনিবার কোচবিহারের দিনহাটার বাসন্তীতে আক্রমণের মুখে পড়েন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামণিক। এরপই এই ঘটনায় বিজেপির তরফে তৃণমূলকে কাঠগড়ায় তোলা হয়।
একই সঙ্গে এদিন নিশীথ আঙুল তোলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিকে। দাবি করেন, শনিবাররে কোচবিহারের ঘটনার পিছনে রয়েছে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যওপাধ্যায়ের উস্কানিমূলক মন্তব্য। পাশাপাশি এও বলেন, ‘আমাকে আক্রমণ করা মানে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্টমন্ত্রককে আঘাত করা। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় উস্কানিমূলক মন্তব্য করেছিলেন, আমার বাড়ি ঘেরাও করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।‘ সেই নির্দেশ অনুযায়ী আমার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান তৃণণূল কর্মীরা।
একইসঙ্গে রবিবার নিশীথ প্রামাণিককে বাংলার আইন-শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অভিযোগ তুলতেও দেখা যায়। তাঁর দাবি বাংলা পুলিশ প্রশাসন একটি দলের নির্দেশে এক তরফাভাবে কাজ করছে। তাঁর গাড়িতে টিয়ার গ্যাসের সেল ছোড়ার অভিযোগও এদিন করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আর এই প্রসঙ্গেইনিশীথের প্রশ্ন, যেখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে পুলিশমন্ত্রী, সেখানে এই ধরনের ঘটনা কী করে ঘটল তা নিয়েই। প্রশ্ন তোলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য চালাচ্ছেন, নাকি অন্য কেউ রাজ্য চালাচ্ছেন তা নিয়েও। এরই রেশ ধরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, ‘বাংলার মানুষের সুরক্ষা নিয়ে আমি চিন্তিত। রাজনীতির লড়াই থাকবে কিন্তু, সাধারণ মানুষের পাশে থাকার জন্য বাধা দেওয়া হচ্ছে। তৃণমূল মাটি হারিয়ে ফেলেছে, নাকি প্রাণে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে। কোথায় মারবে, কখন মারবে জানিয়ে দিলে নিশ্চিতভাবে সেখানে আমি হাজির হব।’ একইসঙ্গে হুঁশিয়ারি, গুন্ডাদের নিয়ে রাজনীতি করা মানুষ কখনই মেন নেবে না। পুলিশ প্রশাসন ও গুন্ডাদের কাজে লাগিয়ে যে কাজ তৃণমূল করছে, তা মানুষ কখনও সমর্থন করবে না বলে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিরক্ষামন্ত্রী নিশীথ।