চিকিৎসা ক্ষেত্রকে লজ্জায় ফেলেছে ‘নিট জালিয়াতি’, নিরপেক্ষ তদন্ত চাইলেন ড. কুণাল সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা: ২০২৪ এর নিটের ফলাফল নিয়ে বিতর্ক চরমে। এমনকি মামলা গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। ভারত জুড়ে নিট পরীক্ষার স্বচছতা এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার এই নিয়ে কলকাতা প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ড. কুণাল সরকার এবং শিক্ষক ড. অর্কদীপ বিশ্বাস। ড. কুণাল বলেন, ‘এবার নিট পরীক্ষার ফলাফলে একটি বড় জালিয়াতি সামনে এসেছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই এর সত্যতা বেরিয়ে আসবে।’ এবিষয়ে তাঁর স্পষ্ট বক্তব্য, ‘মেডিক্যালের সিটের একটি বড় অংশ নিলামের বাজারে রয়েছে। যে কারণে এ ধরনের পরীক্ষার ফলাফল উঠে এসেছে। এই পরীক্ষার ফলাফল যোগ্য প্রার্থীদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।’

এ বিষয়ে সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদ করার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি তিনি রাজ্য সরকারের কাছে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর এবং তাঁদের আইনি পরামর্শ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, প্রথমে নিট সংক্রান্ত মামলায় ন্যাশনাল টেস্টিং এজেন্সির তরফে সুপ্রিম কোর্টে জানানো হয়, ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেস মার্কস দেওয়া হয়েছিল পরীক্ষায় অতিরিক্ত সময় ব্যয়ের ক্ষতিপূরণ হিসাবে। পরে আবার চাপের মুখে কমিটির তরফে ওই ১৫৬৩ জন পরীক্ষার্থীর স্কোরকার্ড বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এনটিএ-র তরফে সুপ্রিম কোর্টে আর এক বিবৃতিতে জানানো হয়, যেসব পরীক্ষার্থীদের স্কোরকার্ড বাতিল করা হচ্ছে, তাঁদের ফের পরীক্ষায় বসার সুযোগ দেওয়া হবে। আগামী ২৩ জুন এই পরীক্ষা হবে। এবং ৩০ জুন পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে। এই নিয়ে ড. কুণালের সাফ মন্তব্য, ‘গ্রেস মার্কস উল্লেখ করে বড় আগুন দমনের চেষ্টা চলছে। বিষয়টির পূর্ণ তদন্ত হলেই সত্য বেড়িয়ে আসবে বলে বিশ্বাস। ’ একইসঙ্গে অধ্যাপক তথা ড. অর্কদীপ বিশ্বাসও নিট পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এদিন।

উল্লেখ্য, গত ৫ মে নিট পরীক্ষা হয়। দেশ জুড়ে ৪৭৫০ সেন্টারে মোট ২৪ লাখ পরীক্ষার্থীরা ডাক্তারির পরীক্ষায় বসেন। ১৪ জুন নিট পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ার কথা থাকলেও, আচমকা লোকসভার ফল প্রকাশের দিনই নিট পরীক্ষার ফল বের হয়। দেখা যায়, ৬৭ জন পরীক্ষার্থী ৭২০ তে ৭২০ পেয়েছেন। এর মধ্যে আবার ৬ পরীক্ষার্থী হরিয়ানার ফরিদাবাদের একই সেন্টারের। এরপরই দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে। একইসঙ্গে প্রশ্ন ওঠে গ্রেস মার্কস নিয়েও। নিটের ফলাফল নিয়ে দেশের ৭টি হাইকোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়। ডাক্তারির মতো এক সংবেদনশীল পরীক্ষায় এইরকম কীভাবে হল, তা খতিয়ে দেখতে নড়েচড়ে বসে সুপ্রিম কোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − eight =