ভারতের মাটি দখল করতে উদগ্রীব চিন। আর তা আঁচ করতে পেরেই লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোলে নিরাপত্তা বাড়াতে চলেছে কেন্দ্র। কারণ, গত কয়েকদিন যাবৎ অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সীমান্তে লালফৌজ সক্রিয়তা বেড়েছে ভালরকমই। দিন কয়েক আগেই সেখানে চিনের সেনার সঙ্গে হাতাহাতি হয় ভারতীয় সেনার। লালফৌজ পিছু হটলেও ফের সীমান্তে হামলা চালানোর আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না বারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফ থেকে। আর সেই কারণে সীমান্ত সুরক্ষিত রাখতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই ওই এলাকায় যোগাযোগ বৃদ্ধি করার কাজ শুরুও করে দিয়েছে কেন্দ্র। এর মধ্যে রয়েছে, ভারত-তিব্বত-চিন-মায়ানমার সীমান্তে আগামী ৫ বছরের মধ্যেই ১৭৪৮ কিলোমিটার ফ্রন্টিয়ার হাইওয়ে করার সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় সূত্রে খবর, এই রাস্তা করা হবে আন্তর্জাতিক সীমানার ২০ কিলোমিটার এলাকার কাছে পর্যন্ত। এই প্রসঙ্গে প্রতিরক্ষা দফতরের আধিকারিকরা জানান, সেখানে দু-লেনের এনএইচ-৯১৩ তৈরি করা হবে। সীমান্ত এলাকায় ওই সড়ক তৈরি করবে কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রক।
এদিকে রবিবার শিলংয়ের সভা থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, কেন্দ্র সীমান্ত এলাকার সুরক্ষা বৃদ্ধি করতে একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। একইসঙ্গে তিনি এও জানান, ‘আমাদের কাছে সীমান্তের গ্রাম দেশের শেষ গ্রাম নয়। এখান থেকেই দেশের শুরু। এই এলাকার গ্রামের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন না হলে দেশের উন্নয়ন হয় না। তাই আমরা ভাইব্রান্ট বর্ডার ভিলেজ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এতে দেশের একদম শেষ সীমা অবধি নতুন রাস্তা, টানেল, রেলপথে যোগাযোগ বাড়াচ্ছি। এর ফলে দেশের সুরক্ষা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনই এলাকার বাসিন্দারাও সুবিধা পাবে।’
এর আগে শুক্রবারই, কেন্দ্রীয় পরিবহন মন্ত্রকের তরফ থেকে অবশ্য জানানো হয়, গত পাঁচ বছরে অরুনাচল প্রদেশের সীমান্ত এলাকায় প্রায় ৩ হাজার কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ করেছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন। বা বিআরও। কারণ, ২০২০ সালে লাদাখ এলাকা দখল করার চেষ্টা করেছিল চিন। তারপরই সীমান্ত এলাকায় রাস্তা এবং পরিকাঠামোগত উন্নয়নের দিকে আর বেশি নজর দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী জানান, অরুণাচল প্রদেশের ছাড়াও চিনের সঙ্গে সীমানা আছে সিকিমের। সিকিমেও নতুন রাস্তা করা হচ্ছে। সেখানে ইতিমধ্যেই ৬৬৩ কিলোমিটার রাস্তা করা হয়েছে। পাশাপাশি কেন্দ্রের তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, সীমান্তের স্ট্র্যাটেজিক পয়েন্ট এলাকায় নিরাপত্তা এবং নজরদারি বৃদ্ধি করা হচ্ছে। ঠিক করা হয়েছে বমডিলা থেকে তৈরি করা হবে ১৭৪৮ কিলোমিটার নতুন রাস্তা। আর এই রাস্তা যাবে ভারত এবং চিনের সীমান্তের কাছে থাকা নারফা, হরি এবং মইগং এলাকা দিয়ে। রাস্তা শেষ হবে মায়ানমার সীমান্তে থাকা বিজয়নগরে। ২০২৪-২৫ সালের মধ্যেই এই রাস্তার কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই রাস্তা তৈরি হলে সেনার যাতায়াত আরও সহজ হবে। এদিকে এই তাওয়াং ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যএই তোপ দাগতে দেখা যায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধিকে।