ভ্যালেন্টাইনস ডে নিয়ে মাতামাতি, কীভাবে শুরু হয়েছিল দিনটি?

ভ্যালেন্টাইনস ডে, মানেই প্রেমের উদযাপণ। হাতে হাত, চোখে চোখ। ভালোবাসার কথাকে নতুন ভাবে বলা। নতুন করে প্রেমে পড়ার কারণ খোঁজা।

কিন্তু এই দিনটা এল কীভাবে? সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নাম শুনলেও ঠিক কীভাবে এই প্রেম দিবস পালন শুরু হয়েছিল, তা হয়তো জানেন না অনেকেই। এর পিছনে কিন্তু শুধু নারী-পুরুষের ভালোবাসা নয়, তার চেয়ে অনেক বৃহত্তর অর্থের ভালোবাসা ছিল। ছিল বিশ্ব সংসারে প্রেমের বানীকে ছড়িয়ে দেওয়া। ছিল আত্মত্যাগের ভাষাও।

 

ইতিহাসের পাতা ওল্টালে জানা যায়, তৃতীয় শতাব্দীতে রোমের বাসিন্দা পুরোহিত ও চিকিৎসক সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের স্মরণে উদযাপিত হয়েছিল এই দিনটি। যিনি ছিলেন একজন ধর্ম প্রচারকও। পাশাপাশি তিনি রোমান সৈন্যদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য বিবাহের অনুষ্ঠানও করতেন।

দ্বিতীয় ক্লডিয়াস ছিলেন  রোমান সম্রাট। যিনি বিশ্বাস করতেন, অবিবাহিত সৈন্যরা বিবাহিতদের চেয়ে বেশি দক্ষ। তাই তাঁদের বিয়ে করায় কঠোর নিষেধাজ্ঞা ছিল। তিনি একটি আইন তৈরি করেন, যাতে বলা ছিল সেনাবাহিনীতে চাকরি করা যুবকেরা বিয়ে করতে পারবেন না। সেন্ট ভ্যালেন্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন যে এই আইনটি অন্যায়। তাই যে সকল সৈন্যরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চান তাঁদের জন্য গোপনে বিবাহের কাজ চালিয়ে যান তিনি। পাশাপাশি তিনি অন্যান্য লোকেদের মধ্যেও ভালবাসা জাগিয়ে তুলতে প্রচার শুরু করেন। কিন্তু খুব তাড়াতাড়িই দ্বিতীয় ক্লডিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের এই কাজ সম্পর্কে জানতে পারেন এবং ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আদেশ দেন। যিনি প্রেমের জন্য নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন সেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগকে স্বীকার করে সেখানকার মানুষেরা তাঁকে একটা দিন উৎসর্গ করার কথা ভাবে।

তবে এ নিয়ে আরও একটা কাহিনি আছে। যেখানে বলা হয়েছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনকে ধর্ম প্রচারের মামলায় কারাবাসে পাঠানো হয়। কারাবাসে থাকার সময় তাঁর চিকিৎসায় কারারক্ষীর অন্ধ মেয়ের দৃষ্টি  ফিরিয়ে দেন। এরপরেই সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের কাজে অনুপ্রাণিত হয়ে মেয়েটির পরিবারসহ অনেকেই খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। মেয়েটির সঙ্গে ভ্যালেন্টাইনের একটি সম্পর্ক তৈরি হয়। সেখানকার রাজার কানে এই খবর পৌঁছয়।আইন অমান্য করে ধর্ম প্রচারের অপরাধের জন্য ভ্যালেন্টাইনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার আগে সেন্ট ভ্যালেন্টাইন মেয়েটিকে উদ্দেশ্য করে একটি চিঠি লেখেন, যাতে চিঠির শেষে লেখা ছিল ‘লাভ ফ্রম ইওর ভ্যালেন্টাইন’। সেই থেকে মানুষ তাঁর নামটিকে ভালবাসার প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করে। পরে পোপ গেলাসিয়াস দিনটিকে ভ্যালেন্টাইন্স ডে হিসেবে ঘোষণা করেন।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =