তৃণমূল বিধায়ক তথা প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অপসারিত সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে একেবারে শীর্ষ আদালতে এক কড়া রিপোর্ট জমা দিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। কেন্দ্রীয় এজেন্সি বুধবার শীর্ষ আদালতে এই রিপোর্ট জমা দিয়ে জানায়, প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে যে ওএমআর শিট জালিয়াতি হয়েছে তার মূল মাথা মানিকই। একইসঙ্গে সিবিআই-এর তরফ থেকে এও দাবি করা হয় যে, মানিক ভট্টাচার্য যে বয়ান দিয়েছেন আর বাকিদের যা বয়ান তার মধ্যে কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যেহেতু মানিকের সঙ্গে অন্যদের কথার কোনও মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না সেই কারণে সরাসরি মানিক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে তদন্তে অসহযোগিতার অভিযোগও আনা হয়েছে সিবিআই-এর তরফ থেকে। কারণ, আদালতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি বলেছে, বাকিদের বয়ানে মিল আছে। তাঁদের বয়ানের সঙ্গে মানিকের কথার কোনও মিল নেই। তদন্তকে ঘেঁটে দিতে মানিক ভট্টাচার্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই জিনিস করছেন বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় এজেন্সির গোয়েন্দাদের। এই প্রসঙ্গেই সামনে আনা হয় প্রাক্তন সচিব রত্না চক্রবর্তীরও প্রসঙ্গ। কারণ, এই ঘটনায় ইতিমধ্যে প্রাক্তন সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচিকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে সিবিআই-এর তরফ থেকে। তারই প্রেক্ষিতে আদালতে সিবিআই-এর তরফ থেকে জানানো হয়, রত্না সিবিআই আধিকারিকদের জানিয়েছেন, কিছু কিছু সময়ে চাপের মুখে তাঁকে বিভিন্ন কাগজে সই করতে হতো।
বুধবার মানিকের ব্যাপারে রিপোর্ট দিতে গিয়ে সিবিআই শীর্ষ আদালতে এও জানায় যে, নিয়োগ দুর্নীতিকে জেলাভিত্তিক ফর্মুলায় করা হয়েছিল। ২০১৬ ও ২০১৭-র টেটে বিপুল নিয়োগ হয়েছিল বেআইনিভাবে। এই সব নিয়োগের পিছনে ছিল টাকার খেলা। একইসঙ্গে কেন্দ্রীয় এজেন্সির সংযোজন, জেলাভিত্তিক চাকরির দামও ছিল আলাদা আলাদা। কিছু কিছু জেলায় দাম নিয়ে দরাদরিও হয়েছে বলে এদিন আদালতে এমনটাও রিপোর্টে দাবি করা হয় সিবিআইয়ের তরফ থেকে।
এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় মানিক ভট্টাচার্যের গোটা পরিবার জেলে রয়েছে। তাঁর পর স্ত্রী ও ছেলেকেও গ্রেপ্তার করেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা। ফলে এদিনের শীর্ষ আদালতে সিবিআই-এর তরফ থেকে যে রিপোর্টজমা পড়ল তাতে মানিকের অস্বস্তি যে আরও বাড়ল তা নিয়ে সন্দেহ নেই।