নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে নজরে আরও ৬ এজেন্ট , চন্দনের থেকেও মিলল তথ্য দাবি সিবিআইয়ের

নিয়োগ দুর্নীতিকান্ডে  সিবিআই-এর নজরে আরও ৬ জন এজেন্ট। রবিবার তাঁদের নিজাম প্যালেসে তলব করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী গোয়েন্দা সংস্থা। রবিবার এই ছ’জন পৌঁছে যান নিজাম প্যালেসে। সিবিআই সূত্রে খবর, এদিন তাঁদের বয়ান রেকর্ড করা হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা জানা চেষ্টা করছেন যে সকল চাকরি প্রার্থীরা চাকরির জন্য এই এজেন্টদের টাকা দিতেন সেই টাকা নিয়ে তাঁরা কী করতেন, কাকে দিতেন। অর্থাৎ প্রথম সারির মাথা অর্থাৎ কুন্তল ঘোষ, চন্দন মণ্ডল এদেরকে টাকা দিতেন নাকি পিছনে আরও কোনও বড় মাপের কেউ রয়েছেন তা খতিয়ে দেখতে চাইছেন সিবিআই-এর তদন্তকারী আধিকারিকেরা। একইসঙ্গে এও জানার চেষ্টা চলছে প্রতিটি চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ঠিক কত টাকা নেওয়া হত সে ব্যাপারেও। সিবিআই সূত্রে খবর, এই টাকার লেনদেন নগদে নাকি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে হত তাও এই ছ’জনের থেকে জানার চেষ্টা করা হবে।

প্রসঙ্গত, এর আগে শনিবার ১০ জন এজেন্টকে নিজাম প্যালেসে ডাকা হয়। সূত্রের খবর, এই ১০ জনের নিয়োগ ‘কেলেঙ্কারি’তে যুক্ত থাকার সপক্ষে তথ্য ইতিমধ্যেই হাতে পেয়েছেন সিবিআই গোয়েন্দারা। এই এজেন্টরা বিভিন্ন জেলায় সক্রিয় ছিলেন বলেই সিবিআই সূত্রে খবর। এরপর রবিবার আরও ৬ জনকে তলব করা হয় সিবিআই দপ্তরে। অর্থাৎ, মোট ১৬ জন এজেন্টকে তলব করা হল সিবিআইয়ের তরফ থেকে।

এর পাশা পাশি সিবিআই সূত্রে এ খবরও মিলছে যে, ধৃত চন্দনকে জেরা করে নাকি আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন তাঁরা। এই প্রসঙ্গে সিবিআই-এর তরফ থেকে জানানো হয়, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত চন্দন মণ্ডলের অ্যাকাউন্ট থেকে বিপুল টাকা যেত মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের কাছে। কারণ, প্রসন্ন রায়ের আন্ডারেই এজেন্ট হিসাবে কাজ করত চন্দন মণ্ডল। এদিকে নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই প্রসন্ন রায়কে গ্রেপ্তার করেছিল সিবিআই।আর চন্দনের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে শুধু উত্তর চব্বিশ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের টাকাই নয়, টাকা আসত দক্ষিণ দিনাজপুরের চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকেও। এই রকম চার চারটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান পেয়েছে সিবিআই। চন্দনকে জেরা করে জানা গিয়েছে, চন্দনের অ্যাকাউন্টগুলিতে উত্তর চব্বিশ পরগনার চাকরিপ্রার্থীদের টাকা আসামাত্রই, তা নিমেষে চলে যেত প্রসন্ন রায়ের কাছে। এরপরেই সিবিআই তদন্তে উঠে আসে, ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে হঠাৎ-ই দক্ষিণ দিনাজপুরের চাকরিপ্রার্থীদের টাকা ঢুকতেও শুরু করে। কেন  দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে এই বিপুল পরিমাণ টাকা চন্দন মণ্ডলের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছিল,  সে ব্যাপারে সঠিক কোনও তথ্য দিতে পারেননি চন্দন এমনাটই জানাচ্ছেন সিবিআই আধিকারিকেরা। কারণ চন্দন মণ্ডলের টেরিটোরি ছিল শুধুমাত্র উত্তর ২৪ পরগনা।

এদিকে সিবিআই সূত্রে খবর, চন্দনের এই টাকা শুধু প্রসন্নর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেই নয় এছড়াও প্রসন্ন স্ত্রীয়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও এই টাকা যেত।সিবিআইয়ের দাবি, চন্দন ও তাঁর আত্মীয়দের কাছ থেকে এমন ২২ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের খোঁজ পেয়েছে সিবিআই।এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেন খতিয়ে দেখছে সিবিআই। চন্দনের ৪ টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা মিলেছে বলে জানা গিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − five =